হকারে অবরুদ্ধ অরফ্যানগঞ্জ

জিরাট ব্রিজ থেকে কালীবাবুর বাজারের শেষ পর্যন্ত একশ বিঘা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অরফ্যানগঞ্জ বাজারে আনাজ, ফল, মাছ-মাংস, মুদি, চা, মশলাপাতি, কাঠের গুদাম ডাল পট্টি সবই রয়েছে এখানে। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, খুচরো ও পাইকারি ব্যবসাও চলত এখানে।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ১২:০০
Share:

সমস্যাবহুল: হকারের ভিড়ে চেনা যায় না প্রবেশপথ। ছবি: অরুণ লোধ।

পঁচিশ বছর আগেও দোকানদার ছিলেন ১৩০০। এখন মেরে কেটে ৮০০। বাজারে পর্যাপ্ত আলো নেই। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। ভাঙাচোরা মাছ বাজারের মেঝেতে জমে থাকে জল। তারই পাশে বসে চলছে বেচাকেনা। মাছ বাছাই করতে কখনও কখনও খরিদ্দারও বসেন নীচে। এমনকী বাজারে ঢোকার মুখেও জমে নোংরা জল। এমনই হাল ব্রিটিশ ভারতে তৈরি খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারের। সেই সঙ্গে রয়েছে হকার সমস্যা। বর্তমানে রাজ্য সরকারের অধীন এই বাজারটি।

Advertisement

জিরাট ব্রিজ থেকে কালীবাবুর বাজারের শেষ পর্যন্ত একশ বিঘা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অরফ্যানগঞ্জ বাজারে আনাজ, ফল, মাছ-মাংস, মুদি, চা, মশলাপাতি, কাঠের গুদাম ডাল পট্টি সবই রয়েছে এখানে। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, খুচরো ও পাইকারি ব্যবসাও চলত এখানে।

বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সামনের ফাঁকা জায়গা হকারের দখলে যাওয়ায় ভিন্ রাজ্য বা দূর দুরান্ত থেকে মালবোঝাই লরি এখানে ঢুকতে সমস্যা হয়। এই কারণে কমে গিয়েছে পাইকারি ব্যবসার পরিধি। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আশির দশক থেকে হকার সমস্যার শুরু। প্রতি দিন ব্যবসায়ী ও হকারদের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। ক্রেতার অভাবে অনেকেই বাজার ছেড়ে দিয়েছেন। প্রায় আড়াই দশকে বাজারের দোকানদার অর্ধেকে নেমে গিয়েছে।’’

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার রোড দিয়ে অরফ্যানগঞ্জ বাজারে ঢোকার পথে নজরে পড়ে বটগাছ নিয়ে ভাঙাচোরা তিনতলা বাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে। সিমেন্ট দিয়ে বাড়ির গায়ে লেখা কালীবাবুর বাজার, ১৯৩২। বিপজ্জনক সেই বাড়ির বাইরে বসে আনাজ, ফলের বাজার। এর উল্টো দিকে রাস্তা জুড়ে থরে থরে আনাজ, ফল-সহ বিভিন্ন জিনিসের দোকানের মেলা। প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে বসা অস্থায়ী বাজারের দৌরাত্ম্যে ঢাকা পড়েছে অরফ্যানগঞ্জ বাজারটিই। অরফ্যানগঞ্জ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি গৌর সাহা বলেন, ‘‘সরকারি এই বাজারে সমস্যা অনেক। বাজারের ভিতরের অবস্থা খুবই খারাপ। হকারে অবরুদ্ধ এই বাজারে আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢুকবে কী করে? তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাজারের পিছনেই রয়েছে বহু পুরনো আনন্দময়ী কালীমন্দির। মন্দির সংলগ্ন আদিগঙ্গার ঘাটে মদ-গাঁজার আসর বসে প্রতি দিন। নিয়মিত চুরি হচ্ছে বাজারে। এই নিয়ে ওয়াটগঞ্জ থানায় বারবার জানিয়েও কিছু হয়নি।’’

বাজারটি দেখভালের দায়িত্বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (জেনারেল) শ্যামলকুমার মণ্ডলকে ফোনে এবং এসএমএসে যোগাযোগ করেও কোনও উত্তর মেলেনি। নিরাপত্তা এবং হকার সংক্রান্ত বিষয়ে ডেপুটি কমিশনার (পোর্ট) সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, ‘‘অভিযোগ শুনলাম। সংশ্লিষ্ট ওয়াটগঞ্জ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন