উপচে পড়ছে জঞ্জাল, মাছি উড়ছে ভনভন

১০১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বাঘা যতীন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমরা এই অবস্থায় বাড়িতে জঞ্জাল জমিয়ে রাখতে ভয় পাচ্ছি। কিন্তু পুরসভার তরফে রোজ জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১৪
Share:

এ ভাবেই ভ্যাট থেকে উপচে পড়ছে জঞ্জাল। ছড়াচ্ছে রোগ। সোমবার, ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দুয়া মোড়ে। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গির সময়ে এলাকায় ঢালাও ছড়ানো হয়েছিল ব্লিচিং পাউডার। মশার বংশবিস্তার আটকাতে তা যে কোনও ভাবেই কার্যকরী নয়, তা জেনেও।

Advertisement

কিন্তু যে সময়ে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো সব থেকে বেশি করে দরকার, তখন কি তা করা হচ্ছে? দক্ষিণ শহরতলির আন্ত্রিক আক্রান্ত এলাকাগুলি এ সময়ে সাফসুতরো রেখে সংক্রমণ ঠেকানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেখানে ব্লিচিং পাউডার কোথাও ছড়ানো হয়নি। পরিষ্কার করা হয়নি জঞ্জালের ভ্যাটও।

আক্রান্ত এলাকার কেন্দুয়া মোড়ের ভ্যাটে সোমবার জঞ্জাল উপচে পড়তে দেখা যায়। সেই জঞ্জাল ছড়িয়ে পড়ে রবীন্দ্রপল্লির খালপাড়ের রাস্তায়। আবার যে বাঘা যতীন হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে, তার পিছনেই মাছ বাজারের যাবতীয় জঞ্জাল ডাঁই হয়ে রয়েছে। বেরোচ্ছে দুর্গন্ধ। ভনভন করছে মাছি। চিকিৎসকেরা বলছেন, জলবাহিত সংক্রমণ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান উপায় গোটা এলাকা সাফসুতরো রাখা। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না আক্রান্ত এলাকাগুলির কোথাও।

Advertisement

শহরের এক পরজীবী বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘শুধু দূষিত জল বা অন্য খাবারই নয়, আক্রান্ত রোগীর মল ও বমি থেকেও রোগ ছড়ায়। মল ও বমি থেকে জীবাণু বয়ে নিয়ে যায় মাছি। ওই মাছি কোনও খাবারের উপরে বসলে সেই খাবারে মিশে যায় জীবাণু। এই ভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।’’

১০১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বাঘা যতীন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমরা এই অবস্থায় বাড়িতে জঞ্জাল জমিয়ে রাখতে ভয় পাচ্ছি। কিন্তু পুরসভার তরফে রোজ জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না। কোথাও রবিবার, কোথাও সোমবার বাড়ির জঞ্জালই তোলা হয়নি। উপচে পড়ছে ভ্যাট।’’ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের অবশ্য দাবি, ‘‘আমার ওয়ার্ডে কোথাও কোনও জঞ্জাল পড়ে নেই। রোজ ময়লা পরিষ্কার হয়।’’

আন্ত্রিক যেখানে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, সেখানে কেন দ্রুত জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না, তা জানতে চাওয়া হলে জঞ্জাল সাফাই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘জঞ্জালের সঙ্গে এই সংক্রমণের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই এলাকায় জঞ্জাল পড়ে নেই।’’ যদিও সোমবার বিকেল পর্যন্ত মাছ বাজারের জঞ্জাল সরাতে উদ্যোগী হয়নি কলকাতা পুরসভা। মেয়র পারিষদের দাবি, ওই এলাকায় স্থায়ী ভ্যাট তৈরি হচ্ছে। কবে সেই ভ্যাট হবে, তা অবশ্য জানাতে পারেননি দেবব্রতবাবু।

এলাকার বাসিন্দারা পুরসভার সরবরাহ করা জলের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না। যাঁদের বাজার থেকে জল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরা পাড়ায় পাড়ায় গাড়িতে করে জল সরবরাহের দাবি তুলেছেন। এক পুর আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘আমরা বলছি, পুরসভার সরবরাহ করা কলের জল শুদ্ধ। তাই গাড়ি করে জল সরবরাহের প্রয়োজন নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন