সুরঞ্জন দাসকে বুধবার হাসপাতালে দেখতে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-বিক্ষোভে আহত উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে বুধবার হাসপাতালে দেখতে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উপাচার্যকে দেখে বেরিয়ে তিনি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি সংঘর্ষে আহত পড়ুয়াদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সুরঞ্জনবাবুর চিকিৎসা চলছে। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উপাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। আশা করা হচ্ছে, আজ, বৃহস্পতিবার তাঁকে ছুটি দেওয়া যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অভাব-অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু এটা আন্দোলনের পদ্ধতি নয়। আমাদের কাছেও ছাত্র-প্রতিনিধিরা আসতে পারত। আশা করি, কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’’ শিক্ষা সূত্রের খবর, মন্ত্রী হাসপাতালেও উপাচার্যকে জানান, গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপাচার্য তাঁকে জানান, ওরা তাঁর ছাত্র। ওদের বোধোদয় হোক, এটাই তিনি চান।
উপাচার্য-নিগ্রহের নিন্দা করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কারা প্ররোচনা দিয়েছে, তাদের খুঁজে বার করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরির মূল কারণই হল, কোনও কমিটিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। তাই কোনও কিছুই গণতান্ত্রিক ভাবে হয় না।’’ আবুটা নেতা তরুণ নস্করও উপাচার্যকে হেনস্থার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র ইউনিয়নের দাবি পড়ুয়াদের ন্যায্য দাবি। তবে এই আন্দোলন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত হওয়া উচিত।’’ ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় রাজ্য সরকারের নির্দেশেই। দু’বছর ধরে সরকারই এই নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভার নির্বাচনের আগে রাজ্যে ছাত্রভোট সম্ভব নয়।
ছাত্র নির্বাচনের দাবিতে এ দিনও আন্দোলনকারীরা যাদবপুরে অবস্থান চালিয়ে যান। বিকেলে তাঁরা মিছিল করে যান গোল পার্ক পর্যন্ত। ঢাকুরিয়া পর্যন্ত মিছিল করে টিএমসিপি-ও। যাদবপুর ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে অন্যান্য কলেজের কিছু পড়ুয়াও সেই মিছিলে যোগ দেন। সেই সঙ্গে ওই মিছিলে ছিলেন তৃণমূল-সমর্থক শিক্ষক, শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে উষসী পাল অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার উপাচার্য যখন ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিলেন, তখন টিএমসিপি-সমর্থক ছাত্র এবং শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরাই আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও চাই, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হোক।’’ টিএমসিপি নেতা মেবার হোসেন জানান, তাঁরা ছাত্রভোটের দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েক জনের নামে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার ওই মেয়াদ বাড়িয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ২০১৭ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগের পরীক্ষায় বসার জন্য স্নাতকোত্তর স্তরে (এমএ, এমএসসি ও এমকম) কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কয়েক জন প্রার্থী। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, তাঁর মক্কেলদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।