—ফাইল চিত্র।
প্রায় ৮০ প্রজাতির প্রজাপতির দেখা মিলবে রবীন্দ্র সরোবরে। রাজারহাট ইকো পার্কের পরে আরও একটি প্রজাপতি পার্ক পেতে চলেছেন শহরবাসী।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই রবীন্দ্র সরোবরের একাংশে এই প্রজাপতি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। মাস খানেক আগেই প্রকল্পের জন্য পরিকাঠামো তৈরিও শুরু করে দিয়েছেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য, আগামী শীতের আগেই দর্শকদের প্রজাপতি পার্ক উপহার দেওয়া।
রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘পরিবেশ আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরেই বছর খানেক আগে প্রকল্পের জন্য যাবতীয় প্রশাসনিক নিয়ম মেনে পরিকল্পনা হয়েছিল। পরিকাঠামো তৈরিও অনেকদিনই শুরু হয়েছে।’’ কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরে বছর খানেক আগেই প্রজাপতি পার্ক তৈরির জন্য এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রকল্প করে কেএমডিএকে প্রস্তাব দেয়। তা মেনেই কাজ হচ্ছে বলে তাদের দাবি।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোবরের খোলা জায়াগায় প্রজাপতি যাতে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা হবে। তবে প্রজাপতিদের জন্মের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক শুঁয়োপোকাদের একটি ঘরে রেখে প্রতিপালন করতে হবে। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুঁয়োপোকা পাখির খাদ্য হয়। সরোবরের পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র বজায় রেখেই প্রকল্প হবে। এ ছাড়া প্রজাপতিদের মধু সংগ্রহের জন্যও প্রয়োজন বিভিন্ন গাছের। সরোবরে রঙ্গন, লেবু, কারিপাতা-সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বপন হবে। আপাতত সরোবরের ‘লিলি পুল’ চত্বরের একাংশে যেখানে আগাছা রয়েছে সেখানেই পার্ক করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সংস্থার কর্ণধার অর্জন বসুরায়ের কথায়, ‘‘কোনও জায়গায় প্রজাপতির সংখ্যার উপরে নির্ভর করে এলাকার পরিবেশ দূষণ কতটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরোবরে এই মুহূর্তে কোন কোন প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া যায়, তার তালিকা তৈরি হচ্ছে।’’ প্রজাপতি বিশেষজ্ঞদের কথায়, এখন রবীন্দ্র সরোবরে প্রজাপতির সংখ্যা যথেষ্ট ভাল। সংরক্ষণ করে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জ়ুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (জেডএসআই) বিজ্ঞানী এবং প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ নবনীত সিংহ বলেন, ‘‘প্রজাপতির জন্য সরোবরে যত গাছ লাগানো হবে, তত প্রজাপতির সংখ্যা বাড়বে। গাছ বিষয়ে বিভিন্ন প্রজাপতির পছন্দ বিভিন্ন। তবে পারিপার্শ্বিক দূষণ প্রজাপতির উপরে কতটা প্রভাব ফেলবে তেমন কোনও সমীক্ষা করেনি সংস্থা। তাই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ জেডএসআই-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, কলকাতা এবং শহরতলি মিলিয়ে ১২০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। তবে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রজাপতি এবং তাদের প্রজাতিতে তারতম্য রয়েছে বলেই জেডএসআই কর্তাদের দাবি।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়ন এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য আদালত ২০১৭ সালেই কর্তৃপক্ষকে প্রজাপতি পার্ক তৈরি ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্প তৈরির কথা বলেছিল। ২০১৮ সালে একটি কমিটি তৈরি হয়। কমিটি পরিদর্শন করে কোথায় কী করা হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা করে। বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ছিল প্রজাপতি পার্ক।