প্রতীকী ছবি।
ঠান্ডা মাথায় খুন করার পরে অপহরণকারীরা ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মহেশতলার বাসিন্দা এক যুবকের দেহ উদ্ধারের পরে এমনই দাবি করছেন পুলিশকর্তারা।
দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলার চটা এলাকার বাসিন্দা শাহিদ আলি মোল্লা গত ১০ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ১৩ অক্টোবর শাহিদের মোবাইল থেকে তাঁর বাড়িতে ফোন করে অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলা জানায়, ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় আসতে হবে। তার পরেই তদন্তে নামে পুলিশ। ওই রাতেই বাসন্তী থানার হোগলাবেড়িয়া নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, দেহ উদ্ধারের পরে আশপাশের থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মামলা দায়ের না হওয়ায় ঘটনাটি প্রাথমিক ভাবে গুরুত্ব পায়নি। পরে শাহিদের বাড়ির লোকেরা এসে দেহ শনাক্ত করেন।
তদন্তকারীরা দাবি করছেন, ধৃতদের জেরা করেই শাহিদের খুনের কিনারা হয়েছে। কী ভাবে?
পুলিশ সূত্রের খবর, নাজিম শাহিদের প্রতিবেশী। দু’জনের জমির কারবারি। মহেশতলার চটায় একটি জমির দালালির বখরা নিয়ে তাদের মধ্যে মাসখানেক ধরে বচসা চলছিল। ১০ অক্টোবর শাহিদকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে নাজিম তাঁকে ফোন করে ক্যানিং থানা এলাকায় ডেকে পাঠায়। শাহিদ সেখানে যাওয়ার পরে নাজিম ও ভাড়াটে খুনি জকি তাঁকে হোগলাবেড়িয়ায় নিয়ে যায়। তদন্তকারীদের কথায়, গরম দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বেহুঁশ করার পরে শাহিদের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পরের দিনই মহেশতলা ফিরে আসে নাজিম। তার পরেই শাহিদের পরিজনেদের কাছে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করায়।
তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, শাহিদকে খুন করার আগে তাঁর মোবাইল থেকে সিম কার্ডটি খুলে নিয়েছিল জকি। তার পরে নিজের ফোনে সিমটি ঢুকিয়ে সেরিনাকে দিয়ে শাহিদের বাড়িতে ফোন করায় সে। শাহিদ যে বেঁচে আছে, তা প্রমাণ করতেই তাঁর সিম থেকে ফোনটি করা হয়েছিল। অর্থাৎ শাহিদকে খুনের পরেও টাকা নেওয়ার ছক কষেছিল নাজিম।
বিশদ জানতে সেরিনা, জকি ও নাজিমকে জেরা করা হচ্ছে। ঘটনায় আরও এক জন জড়িত আছে বলে অনুমান। তার খোঁজ শুরু হয়েছে।