প্রতীকী ছবি।
ভরসন্ধ্যার জনবহুল রাজপথ। মোবাইলে কথা বলতে বলতে হাঁটছেন এক মহিলা। আচমকাই পিছন থেকে মোটরবাইক চেপে এসে ফোন ছিনিয়ে নিল পালাল দুই দুষ্কৃতী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়ির ভিড়ে মিলিয়ে গেল তারা। সোমবার সন্ধ্যায় এমনটাই ঘটেছে জওহরলাল নেহরু রোডে, ভারতীয় জাদুঘরের সামনে। এখনও কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
মোটরবাইকে চেপে এমন ছিনতাই এক সময়ে নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছিল। কিছু ধরপাকড়ের পরে তাতে একটু হলেও রাশ টানা গিয়েছিল। সোমবারের ঘটনার পরে পুলিশের একাংশ বলছে, ফের ছিনতাইবাজেরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে শহরে। তা ছাড়া, ভারতীয় জাদুঘর শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বহু বিদেশি পর্যটক ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করেন। এমন জায়গায় ছিনতাই হওয়া কি শহরের নিরাপত্তাহীনতার ছবিটাকেই বেআব্রু করে দেয় না?
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণী অদিতি মুখোপাধ্যায় হাওড়ার ব্যাঁটরার বাসিন্দা। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি জাদুঘরের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। সে সময়ে দুই দুষ্কৃতী তাঁর দামি মোবাইল ফোনটি ছিনতাই করে পালায়। অদিতি জানিয়েছেন, পিছন থেকে হেঁচকা টানে মোবাইলটি কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তার পরে মুহূর্তের মধ্যেই উধাও হয়ে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি ছিনতাইবাজদের মুখ বা মোটরবাইকের নম্বর দেখতে পাননি। এর পরে অদিতি পার্ক স্ট্রিট থানায় যান। কিন্তু জানতে পারেন, ঘটনাস্থল নিউ মার্কেট থানার অধীন।
অদিতি জানান, রাত হয়ে যাওয়ায় তিনি সোমবার আর নিউ মার্কেট থানায় যাননি। মঙ্গলবার নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। পুলিশ সূত্রের খবর, ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানানো হলেও অভিযোগকারিণী তাঁর মোবাইলের আইএমইআই নম্বর দেননি। অদিতি বলেন, ‘‘ফোনের কাগজপত্র বাপের বাড়িতে রয়েছে। মায়ের অসুস্থতার জন্য এখন বাইরে রয়েছি। এ সপ্তাহেই আইএমইআই নম্বর পুলিশকে দিয়ে দেব।’’
আইএমইআই নম্বর না পেলে ছিনতাই যাওয়া ফোন উদ্ধার করা যাবে না, এমন যুক্তি মানতে নারাজ পুলিশেরই একাংশ। তাঁরা বলছেন, ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই ছিনতাইবাজদের শনাক্ত করা সম্ভব। অদিতির সন্দেহ, দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই তাঁর পিছু নিয়েছিল।
শহরবাসীর নিরাপত্তা কমছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘জাদুঘরের সামনে যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকে। কারা ছিনতাই করেছে, তার খোঁজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, অপরাধীরা তাড়াতাড়িই ধরা প়়ড়ে যাবে।’’