Lamp Post

বাতিস্তম্ভ চুরি করে পাঠানো হত বিহারে, কবুল চক্রের পান্ডাদের

গত সেপ্টেম্বরে নারায়ণপুর থানা এলাকার এক জায়গায় টহল দেওয়ার সময়ে পুলিশকর্মীরা খেয়াল করেন, রাস্তায় পড়ে থাকা বড় বড় বাতিস্তম্ভ ক্রেনের মাধ্যমে ট্রেলারে ওঠানো হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৪৪
Share:

আমডাঙায় খোঁজ মেলে চক্রের এক পান্ডা ভানুপ্রতাপ সিংহের। প্রতীকী ছবি।

অনলাইনে জালিয়াতির মাধ্যমে মানুষকে সর্বস্বান্ত করে দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যাংয়ের নাম বহুল পরিচিত। বিধাননগর কমিশনারেট এ বার হদিস পেয়েছে বিহারের এমন এক চক্রের, যাদের কাজ ছিল রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে সরকারি প্রকল্পে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাস্তায় পড়ে থাকা বাতিস্তম্ভ চুরি করা। তার পরে সেগুলি ঘুরপথে বিহারেরই অসাধু ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বরে নারায়ণপুর থানা এলাকার এক জায়গায় টহল দেওয়ার সময়ে পুলিশকর্মীরা খেয়াল করেন, রাস্তায় পড়ে থাকা বড় বড় বাতিস্তম্ভ ক্রেনের মাধ্যমে ট্রেলারে ওঠানো হচ্ছে। কৌতূহলবশত পুলিশ আধিকারিকেরা ট্রেলারের চালককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অভিযোগ, ক্রেন ও ট্রেলারের চালক, কেউই উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। আটক করা হয় সাতটি বাতিস্তম্ভ, একটি ক্রেন এবং ওই ট্রেলার। এই ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় খোঁজ মেলে চক্রের এক পান্ডা ভানুপ্রতাপ সিংহের। সে আদতে বিহারের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, তাকে গ্রেফতার করার পরেই ওই চক্রের সম্বন্ধে জানতে পারা যায়।

পুলিশের দাবি, ভানুপ্রতাপকে জেরা করে রামকুমার সিংহ নামে এক যুবকের খোঁজ মেলে। তাকে বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয়। একটি গাড়িতে চেপে বাতিস্তম্ভ চুরি-চক্রের পান্ডারা আমডাঙায় এসেছিল। ভানুপ্রতাপকে নামিয়ে সেটি বিহারে ফিরে যায়। গাড়িটি কাঠমান্ডু সীমান্তের কাছ থেকে আটক করে কলকাতায় আনা হচ্ছে। আজ, শুক্রবার সেটি বারাসত আদালতে পেশ করার কথা।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, ভানুপ্রতাপ আমডাঙায় ঘাঁটি গেড়েছিল। তার কাজ ছিল নিউ টাউন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বাতিস্তম্ভের হদিস করে বিহারের লোকজনকে খবর দেওয়া। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অত বড় বড় বাতিস্তম্ভ রাখার গুদাম ডব্লিউবিপিডিসিএলের নেই। আটক হওয়া বাতিস্তম্ভগুলি তাদেরই একটি প্রকল্পে ব্যবহার করার কথা ছিল বলে ঠিকাদার সংস্থা পুলিশকে জানিয়েছে। এর আগে ইকো পার্ক থানা এলাকা থেকেও ওই ভাবে বাতিস্তম্ভ চুরি করে নিয়ে গিয়েছে বিহারের লোকজন।’’

পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা স্বীকার করেছে যে, বিহারের সরকারি প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য ওই সব বাতিস্তম্ভ সেখানকার ঠিকাদারদের বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল তারা। কোনও নামী সংস্থার বদলে চোরাই পথে বাতিস্তম্ভ কিনলে ঠিকাদারেরও লাভের পরিমাণ বেশি থাকে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

তদন্তকারীরা জানান, রামকুমার ও ভানুপ্রতাপকে জেরা করে জানা যায়, কাঠমান্ডু সীমান্তে গাড়িটি রয়েছে। দু’দিন আগে বিহার পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে তল্লাশি চালিয়ে নারায়ণপুর থানার পুলিশ গাড়িটি আটক করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন