ফুটপাথে সঙ্গীকে খুন করার অভিযোগে ধৃত মহিলা

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডে টহল দেওয়ার সময়ে ফুটপাথের উপর এক ব্যক্তির সংজ্ঞাহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখেন ওয়াটগঞ্জ থানার এক অফিসার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

একে অপরকে পছন্দ করে গার্ডেনরিচের ফুটপাথে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। বুধবার সেই সম্পর্ক শেষ হল এক জনের মৃত্যুতে। ফুটপাথেই শম্ভু পোদ্দার (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মাথা থেঁতলে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর সঙ্গী, চল্লিশোর্ধ্ব এতোয়ার মল্লিকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

এতোয়ারকে গ্রেফতার করেছে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় এতোয়ার শম্ভুকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। আজ, বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলার কথা। পুলিশ সূত্রের খবর, শম্ভুর মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁর মাথার পিছনের অংশ এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, ভারী পাথর জাতীয় কিছু দিয়ে শম্ভুর মাথায় আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে ফুটপাথের একটি ভাঙা টালিও পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডে টহল দেওয়ার সময়ে ফুটপাথের উপর এক ব্যক্তির সংজ্ঞাহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখেন ওয়াটগঞ্জ থানার এক অফিসার। তিনি জানান, রাত দুটো নাগাদ একটি মোবাইলের দোকানের সামনে এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। আশপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। এর পর ওই অফিসারই সংজ্ঞাহীন ব্যক্তিকে নিয়ে গিয়ে এসএসকেএমে ভর্তি করান। বুধবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডে এতোয়ার নামে এক মহিলার সঙ্গে থাকতেন ওই ব্যক্তি। স্থানীয় একটি শুঁড়িখানা থেকে এতোয়ারকে আটক করে পুলিশ। জেরায় এতোয়ার জানায়, মৃতের নাম শম্ভু পোদ্দার। পুলিশের দাবি, রাগারাগি করে সে শম্ভুকে মেরেছিল বলে স্বীকার করেছে এতোয়ার। ওই আঘাতের ফলে যে শম্ভুর মৃত্যু হতে পারে, তা সে বুঝতে পারেনি বলে দাবি করেছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাগের মাথায় সে এলাকা ছে়ড়ে চলে গিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে এতোয়ার। জেরায় ধৃত দোষ স্বীকার করলেও এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ।

বাবলু করিম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা এ দিন জানালেন, শম্ভু এবং এতোয়ার গার্ডেনরিচ এলাকার কয়েকটি হোটেলে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। দু’জনে কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে থাকছিলেন ওই এলাকার ফুটপাথে। এতোয়ারের প্রথম পক্ষের স্বামী মারা গিয়েছেন। শম্ভুর স্ত্রী-ও তাঁর সঙ্গে থাকতেন না। দু’জনেরই আগের পক্ষের সন্তানেরাও আর তাঁদের সঙ্গে থাকতেন না। বাবলু বলেন, ‘‘ওরা একে অপরকে ভালবাসত। একসঙ্গেই থাকত। অবশ্য রোজই ঝগড়া লেগে থাকত। মত্ত অবস্থায় মারামারিও করত। কাল রাতেও সম্ভবত তা-ই হয়েছে।’’ রণেন চট্টোপাধ্যায় নামের এক স্থানীয় দোকানদারও জানান, প্রায়ই ঝগড়া হত শম্ভু ও এতোয়ারের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন