বচসার সুযোগে হাতসাফাই, ধৃত চক্রের তিন

পুলিশ সূত্রে খবর, আটক করা স্কুটিটি নিয়েই ধৃতেরা মাঝ রাতে ‘অপারেশন’ চালাত। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুরজকুমার সোলাঙ্কি, রাজা সাউ এবং সম্রাট পাল ওরফে গুড্ডু।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৩
Share:

ধৃত সুরজকুমার সোলাঙ্কি, রাজা সাউ এবং সম্রাট পাল। নিজস্ব চিত্র

নিঝুম রাতে দুষ্কৃতীরা কার্যত পায়ে পা লাগিয়ে বচসা শুরু করত গাড়ির চালকের সঙ্গে। বচসা চলাকালীন চলত হাতসাফাইও। গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রী কিছু বোঝার আগেই জিনিস হাতিয়ে চম্পট দিত দুষ্কৃতীরা। এমনই একটি চক্র বেশ কিছু দিন ধরে সক্রিয় হয়েছিল দক্ষিণ এবং পূর্ব কলকাতা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি মোবাইল এবং একটি স্কুটি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, আটক করা স্কুটিটি নিয়েই ধৃতেরা মাঝ রাতে ‘অপারেশন’ চালাত। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুরজকুমার সোলাঙ্কি, রাজা সাউ এবং সম্রাট পাল ওরফে গুড্ডু। তিনজনই কসবা-তিলজলার বাসিন্দা। ধৃত রাজা আগেও ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, শনিবার রাত দে়ড়টা নাগাদ তিলজলা থানা এলাকার পিকনিক গার্ডেনের বিলুর মাঠের কাছে তিন দুষ্কৃতী স্কুটিতে চেপে এসে একটি অ্যাপ ক্যাবকে আটকায়। অ্যাপ ক্যাবটি স্কুটিতে ধাক্কা মেরেছে অভিযোগ তুলে এক দুষ্কৃতী চালকের সঙ্গে বচসা শুরু করে। এর মধ্যেই দ্বিতীয় দুষ্কৃতী এসে গাড়ির অন্য জানালা দিয়ে চালকের সঙ্গে বচসা শুরু করে। দু’দিক থেকে লাগাতার কথা কাটাকাটির মাঝেই তৃতীয় জন চালকের মোবাইলটি তুলে নেয়। হাত সাফাইয়ের কাজ শেষ হতেই তিন জন পালিয়ে যায়। পরে গাড়ির চালক মহম্মদ আফসার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। উপর মহলের নির্দেশে থানার চার অফিসার শুভব্রত কর, স্বরাজ ঘোষ, রাকেশ দেবনাথ এবং আসাদুর রহমান সর্দারকে নিয়ে গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল। ফুটেজ দেখে ওই অফিসারেরা প্রথম সুরজকুমার সোলাঙ্কিকে শনাক্ত করেন। এর পরেই বন্ডেল গেটের কাছে তার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজ মেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে এই কায়দায় গাড়ির ভিতর থেকে মোবাইল-সহ নানা জিনিস হাত সাফাইয়ের প্রায় ছ’টি ঘটনা ঘটেছে। এটা মাথায় রেখেই শনিবার গভীর রাতে তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই তড়িঘড়ি ওই দল তৈরি করে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর তাতেই কেল্লা ফতে বলে দাবি পুলিশের।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, ধৃতদের জেরায় প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বালিগঞ্জ, কসবা, গাড়িয়াহাট এলাকায় দুষ্কৃতীরা এখন পর্যন্ত প্রায় ৬টি ঘটনা ঘটিয়েছে। মূলত মোবাইল ফোন টার্গেট করত দুষ্কৃতীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন