ভাঙচুরের পরে পুলিশের বাইক। বৃহস্পতিবার, পাথরঘাটায়। নিজস্ব চিত্র
ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মাইক বাজায় পুলিশ গিয়েছিল আদালতের নির্দেশ মেনে তা বন্ধ করতে। আর তাতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিস্থিতি। মাইক বন্ধ করতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে নিগৃহীত হলেন পুলিশকর্মীরা। অভিযোগ, ভাঙচুর করা হল পুলিশের গাড়িও। বুধবার রাতে নিউ টাউন থানা এলাকার পাথরঘাটা গ্রাম এলাকায় ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্ত অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয় টায়ার। স্থানীয়দের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ মাইক বন্ধ করার নামে অতিসক্রিয়তা দেখাতে চায়। তার জেরেই এত বড় গোলমাল।
বিধাননগর পুলিশের ডিসি (সদর) অমিত জাভালগি জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। পুলিশ আদালতের নির্দেশ মেনেই মাইক বন্ধ করতে গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত দেড়টার পরে মাইক বাজছিল। ফলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইক বন্ধ করতে বলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশ মাইক বাজানোর সময়সীমা সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশের কথা বললেও কেউ সে কথা কানে তুলতে চাননি। অভিযোগ, উল্টে পুলিশের সঙ্গে বচসা জুড়ে দেন অনেকে। পুলিশ মাইক বন্ধ করতে জোরাজুরি করলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছে অভিযোগ করে উত্তেজিত জনতা রাতেই রাজারহাট-বিষ্ণুপুর রোডে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি একই থাকে।
অভিযোগ, এ দিন সকালে ৫ জন ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মী ডিউটি করতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়। তাতে দু’জন গুরুতর আহত হন। এক ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয়। পুলিশের দু’টি মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চ পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ বিবেচনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে মাইকের আওয়াজ বন্ধ হয়নি বলেই একাংশের দাবি। ঘটনায় এ ছাড়া এক সিভিক ভলান্টিয়ারও আহত হন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
শেষে রাজারহাট-নিউ টাউনের তৃণমূলের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে এলাকায় যান। তিনিও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। সব্যসাচী জানান, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনেই পুলিশ মাইক বন্ধ করতে গিয়েছিল। অশান্তি হয়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’