ফিল্মি কায়দায় দুষ্কৃতী পাকড়াও পুলিশের

ভরদুপুরে রাস্তা দিয়ে ছুটছে দুই যুবক। পিছনে ধাওয়া করছে ষণ্ডা চেহারার আরও দুই যুবক। তাঁদের হাতে রয়েছে বন্দুক। মঙ্গলবার দুপুরে দূরদর্শন কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান পথচারীরা। সিনেমার দৃশ্য চলছে কিনা তা নিয়েই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু, ভুলটা ভাঙে কিছু ক্ষণ পরে, যখন দেখা যায় সামনে ছুটতে থাকা দুই যুবকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নিয়ে আসছেন পিছনে থাকা ষণ্ডা চেহারার ওই দুই যুবক। তখন বোঝা যায়, এটা কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়। ষণ্ডা চেহারার ওই দুই যুবক আদতে পুলিশ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ২০:৩৪
Share:

ভরদুপুরে রাস্তা দিয়ে ছুটছে দুই যুবক। পিছনে ধাওয়া করছে ষণ্ডা চেহারার আরও দুই যুবক। তাঁদের হাতে রয়েছে বন্দুক। মঙ্গলবার দুপুরে দূরদর্শন কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান পথচারীরা। সিনেমার দৃশ্য চলছে কিনা তা নিয়েই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু, ভুলটা ভাঙে কিছু ক্ষণ পরে, যখন দেখা যায় সামনে ছুটতে থাকা দুই যুবকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নিয়ে আসছেন পিছনে থাকা ষণ্ডা চেহারার ওই দুই যুবক। তখন বোঝা যায়, এটা কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়। ষণ্ডা চেহারার ওই দুই যুবক আদতে পুলিশ!

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, তোলাবাজির অভিযোগে ওই দুই দুষ্কৃতীকে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তারক ছেত্রী নামের এক দুষ্কৃতী। সঙ্গী অজয় সাউ-এর নামেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পুলিশের কাছে ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, তারক মাস খানেক আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তার পরেই এক ব্যবসায়ীর কাছে টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছিল। বেশ কয়েক বার ওই ব্যবসায়ীকে ধমকেছিল তারক। এর পর ওই ব্যবসায়ী যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানান। সরাসরি তাঁদের ধরতে না গিয়ে যাদবপুর থানার অতিরিক্ত ওসি দেবাশিস দত্ত অন্য পথ বেছে নেন। ওই দুই দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য রীতিমত ফাঁদ পাতেন তিনি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে তারককে ফোন করা হয়। তাকে বলা হয়, যে ব্যবসায়ীর থেকে সে টাকা দাবি করেছে তিনি টাকা দিতে চান। এ দিন দুপুরে গল্ফ গ্রিন এলাকায় এসে সেই টাকা নিয়ে যেতে বলা হয়। এতে রাজিও হয়ে যায় তারক। এ ভাবেই পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দেয় সে।

পরিকল্পনা মতোই, এ দিন সাউথ সিটির কাছে টাকা নিতে আসে তারক ও অজয়। সেখানে যাদবপুর থানার অতিরিক্ত অফিসার ইনচার্জ দেবাশিস দত্ত ও সাব-ইন্সপেক্টর সুমন বিশ্বাস একটি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।

সেখানে পুলিশের গাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই তারক ট্যাক্সি নিয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু, কোনও ভাবে সে আঁচ করতে পারে যে পুলিশ ওই চত্বরেই রয়েছে। বেগতিক বুঝে লর্ডসের মোড় থেকে বাজার এলাকার দিকে যেতে শুরু করে তারকের ট্যাক্সি। তত ক্ষণে পুলিশও গাড়িতে তার পিছু নেয়। চালকের আসনে খোদ দেবাশিস দত্ত। পিছনের গাড়ি দেখে তখন তারক ও অজয় প্রায় নিশ্চিত হয় যে পিছনে পুলিশ রয়েছে। এর পরে তাদের গাড়ির গতি বাড়তে থাকে। উদয়শঙ্কর সরণির কাছে ওভারটেক করে ওই ট্যাক্সির সামনে এসে দাঁড়ায় পুলিশের গাড়ি। তখন ট্যাক্সি থেকে নেমে ফের লর্ডসের মোড়ের দিকে দৌড়তে থাকে তারক ও অজয়। পুলিশও তাদের পিছনে ধাওয়া করে। বন্দুক উঁচিয়ে দৌড়তে শুরু করে পুলিশও। এ ভাবেই ক্রমশ দৌড়ের গতি বাড়িয়ে দেয় দু’পক্ষ। অবশেষে প্রায় পাঁচশো মিটার পথ অতিক্রম করে হাতে আসে তারক ও তার সঙ্গী। সেখানে তাদের তল্লাশি করে খুর, দেশি পিস্তল, কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হেয়ার স্ট্রিট ও লেক থানায় তারকের নামে ডাকাতির অভিযোগও রয়েছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই দু’জনকে অস্ত্র আইনে ও তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন