তৃতীয় ব্যক্তির হাতে চাবি কেন, ধন্দে পুলিশ

তপসিয়া রোডের একটি লেদ কারখানায় পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা শৈলেন অধিকারীর (৫৪) বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়েছিল রবিবার সকালে। তিলজলা থানা এলাকার সেই ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও খুনের কিনারা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩১
Share:

শৈলেন অধিকারী

তপসিয়া রোডের একটি লেদ কারখানায় পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা শৈলেন অধিকারীর (৫৪) বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়েছিল রবিবার সকালে। তিলজলা থানা এলাকার সেই ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও খুনের কিনারা হয়নি। তবে পুলিশের এক কর্তা সোমবার বললেন, ‘‘কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছি।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সকালে শৈলেনের দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর পায়ে চটি ছিল না। খোঁজ মেলেনি তাঁর মোবাইলেরও। মৃতের স্ত্রী জয়িতা অধিকারী পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে শৈলেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যার পরে স্বামী বাড়ি না ফেরায় রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে ফোন করলে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি জানান, শৈলেন ওড়িশা গিয়েছেন। ফোনটি পার্ক সার্কাসের একটি অফিসে রেখে গিয়েছেন। ওই ব্যক্তির কথায় অসঙ্গতি থাকায় আরও প্রশ্ন করতে গেলে ফোনটি কেটে দেওয়া হয়। এর পরেই বন্ধ হয়ে যায় ফোনটি। পুলিশ শৈলেনের মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে জানতে পেরেছে, জয়িতাদেবীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর শেষ কথোপকথনের সময়ে শৈলেনবাবুর ফোনটি তপসিয়া সেকেন্ড লেন এলাকায় ছিল।

মৃতের পরিবারের দাবি, কারখানার চাবি থাকত মালিক শৈলেন এবং কর্মী সালামের কাছে। অথচ শনিবার সকালে আনোয়ার নামে এক ব্যক্তিকে কারখানার তালা খুলতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ জেনেছে, আনেয়ারের কাছে কারখানার চাবি থাকার কথা নয়। চাবি কী ভাবে আনোয়ারের হাতে গিয়েছিল, সে বিষয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ আরও জেনেছে, শনিবার সকালে ৩-৪ জন লোক নিয়ে একটি ছোট গাড়ি করে এসেছিলেন আনোয়ার। তা হলে কি কারখানার ভিতরের দেহ লোপাট করতেই গাড়ি আনা হয়েছিল? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। স্বামী বাড়ি না ফেরায় শনিবার সন্ধ্যায় কসবা থানায় যান জয়িতা। সেই রাতেই ওই কারখানায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু তখন শৈলেনের দেহ মেলেনি। রবিবার সকালে ফের তল্লাশি চালানো হয় সেখানে। পুলিশের সঙ্গে তখন ছিলেন মৃতের স্ত্রী ও পুত্রও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শৈলেনের দেহটি কারখানার এক কোণে অন্ধকারে মাটির নীচে রেখে তার উপরে লোহার যন্ত্রাংশ ভর্তি বস্তা রাখা ছিল। এমন ভাবে বস্তাগুলি রাখা হয়েছিল, যাতে দেহটি চোখে না পড়ে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন কারখানার কোণটিতে যেতেই শৈলেনের ছেলে অভীক পচা গন্ধ পান। পুলিশকে তা জানাতেই বস্তা নামিয়ে দেহটি উদ্ধার হয়। তবে ওই কারখানায় শনিবার সারা রাত থাকার পরেও কর্মী সালাম কেন ঘটনাটি টের পেলেন না, সে বিষয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশের

একটি সূত্রের দাবি, সালামকে রবিবার রাত থেকে দফায় দফায় জেরা করে বেশ কিছু সূত্র মিলেছে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা তদন্তের শেষ পর্যায়ে। দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই তারা

ধরা পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন