হাসপাতালে আহত বিকাশ হালদার। নিজস্ব চিত্র
ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে বস্তির ঘরে বোমা তৈরি করতে গিয়ে শনিবার বিস্ফোরণে জখম হয়েছিল এক কিশোর-সহ দু’জন। সেই ঘটনায় পিঙ্কু হালদার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনার রাতে ট্যাংরা থেকেই তাঁকে ধরা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু হয়েছে।
শনিবার রাতের ঘটনায় আহত দুই কিশোর সুজয় হালদার ও বিকাশ হালদারকে এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হলে সুজয়কে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিকাশের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে গভীর রাতে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তার ডান হাত ও দু’পা ঝলসে গিয়েছে। তবে অবস্থা স্থিতিশীল। বিকাশকে কিছু দিন হাসপাতালে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
বস্তির যে ঘরে দুর্ঘটনা ঘটেছে, রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল ঘরটি তালাবন্ধ। স্থানীয়েরা জানালেন, পুলিশ তালা দিয়ে গিয়েছে। আহত সুজয় এ দিন ছিল তার কাকা পিঙ্কুর বাড়িতে। বাঁ পায়ের একাংশ পুড়ে যাওয়ায় সে হাঁটতে পারছে না। সে বলে, ‘‘আমি ও বিকাশ ৪-৫টি চকলেট বোমার মশলা নিয়ে বড় বোমা তৈরি করতে গিয়েছিলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বোমা ফেটে যায়। আর কিছু মনে নেই। হাসপাতালে আমার জ্ঞান ফেরে।’’ বিকাশের বাবা মুক্ত হালদার একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘তখন কারখানায় ছিলাম। ফোন পেয়ে এসে দেখি, ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
গোবিন্দ খটিক রোডেই বস্তির ঘুপচি ঘরে দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পিঙ্কুর। ঘটনার পরে পুলিশ সেই ঘর সিল করে দেওয়ায় বিপাকে তাঁরা। ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্ত্রী রয়েছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। পিঙ্কুর এক আত্মীয় বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে আর্জি, ঘরটি অবিলম্বে খুলে দেওয়া হোক।’’ লালবাজারের এক কর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওই ঘরে বেআইনি ভাবে বিস্ফোরক মজুত রাখা হয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে ঘরটি এখন বন্ধ থাকবে।’’
ধৃত পিঙ্কুকে রবিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, তিনি বেআইনি ভাবে ঘরে বিস্ফোরক মজুত রেখেছিলেন। কেন ওই বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল, তা জানতে তাঁকে আরও জেরা করা প্রয়োজন। আদালত পিঙ্কুকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দিয়েছে।