Bangladeshi Model Arrest

শান্তার চারটি গাড়ি কার নামে কেনা, কলকাতাতেই বা কেন থাকতেন? বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেলকে ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য

শান্তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে দু’টি আধার কার্ড। একই আধার নম্বরে দু’টি কার্ড পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তার মধ্যে একটির ঠিকানা রয়েছে কলকাতায়, অন্যটিতে বর্ধমানের এক ঠিকানার উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ১৮:১৪
Share:

বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেল শান্তা পাল। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেল শান্তা পালের নামে দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কে। ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে কত টাকা ছিল, সেগুলি থেকে কী কী আর্থিক লেনদেন হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, শান্তার চারটি গাড়ি রয়েছে। সেগুলি ব্যবসায় খাটানো হত। ওই গাড়িগুলি কার নামে কেনা হয়েছে, তা-ও তদন্তের আওতায় রাখা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, একটি অতিথিশালা (গেস্ট হাউস) বানানোরও পরিকল্পনা ছিল শান্তার। তার জন্য ঋণও নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই ঋণ শান্তা নিজের নামে নেননি বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। তিনি কী ভাবে ওই ঋণ পেলেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কলকাতায় যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড় থেকে গ্রেফতার হন শান্তা। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ছিল দু’টি আধার কার্ড। একই আধার নম্বরে দু’টি কার্ড পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তার মধ্যে একটির ঠিকানা কলকাতার, অন্যটিতে বর্ধমানের এক ঠিকানার উল্লেখ রয়েছে।

এ ছাড়া বর্ধমানের ঠিকানায় শান্তার নামে একটি ভোটার কার্ডও পাওয়া গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তিনি বর্ধমানেও কখনও থেকেছেন কি না, বর্ধমান থেকে কেন কলকাতায় চলে এলেন, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। বর্ধমানের ঠিকানায় শান্তার যে ভোটার কার্ডটি পাওয়া গিয়েছে, সেটির তথ্য ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই ভোটার-নথির তথ্য যাচাই করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেল শান্তা পাল। ছবি: সংগৃহীত।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত জুলাই মাসেই শান্তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। তার পরেও কেন তিনি এ রাজ্যে থেকে গিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় শান্তা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ শান্তিপূর্ণ জায়গা। তাই তাঁর এখানে থাকতে ভাল লাগে। পুলিশি জেরায় নিজেকে বিবাহিত বলেও দাবি করেছেন শান্তা। সেই তথ্যও যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। গত কয়েক বছর ধরে যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২০২৩ সাল থেকে ওই বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। বাংলাদেশে শান্তা দু’টি প্রতিষ্ঠানে মডেল হিসাবে কাজ করতেন। বাংলাদেশি সিনেমাতেও কাজ করেছেন বলে দাবি। ২০১৯ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দেশে এসে তেলুগু ছবিতে কাজ করেন শান্তা। কী ভাবে সেই সুযোগ মিলেছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, কলকাতায় গাড়ি ভাড়া দিতেন, পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবসাও করতেন শান্তা।

সম্প্রতি তিনি পর্যটনের ব্যবসা শুরু করবেন বলে কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। গোয়েন্দারা জানান, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার এক বাসিন্দার সঙ্গে সেই সূত্রে পরিচয় হয় শান্তার। ওই ব্যক্তি পরে অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশের নাগরিক শান্তা সে দেশের পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসে ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে শহরে থাকছেন। এর পরেই শান্তাকে গত সোমবার গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement