জেরার সময় অনিন্দিতাকে আর তেমন মুখ খোলানোই যাচ্ছে না বলে পুলিশ সূত্রে খবর।— ফাইল চিত্র।
আইনজীবী রজত দে খুনের মামলায় তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে হেফাজতে পেয়েও, কার্যত ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্ত। গ্রেফতার হওয়ার আগে, অনিন্দিতা খুনের কথা স্বীকার করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জেরার সময় অনিন্দিতাকে আর তেমন মুখ খোলানোই যাচ্ছে না বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
অনিন্দিতা আইনের ছাত্রী ছিলেন। বিয়ের আগে কলকাতা এবং মুম্বই হাইকোর্টে বেশ কিছু দিন ওকালতিও করেছেন। ফলে জেরার সময় বারবারই নানান আইনি প্যাঁচের সামনে পড়ে যেতে হচ্ছে পুলিশকে।
গুরুতর প্রশ্নগুলোয় এখনও কোনও দিশা দেখতে পায়নি পুলিশ। যেমন, কী ভাবে খুন করা হয়েছিল রজত দে-কে?
অনিন্দিতা যদি খুন করে থাকেন, তবে তিনি কি একাই তা করেছেন? না কি অন্য কেউ তাঁর সঙ্গে ছিল? প্রায় ছ’ফুট লম্বা এবং স্বাস্থ্যবান রজতকে এক অনিন্দিতার পক্ষে কি খুন করা সম্ভব? এখনও এ সব প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই তদন্তকারীদের কাছে।
আরও পড়ুন: নিউ টাউন-কাণ্ডে পুনর্নির্মাণ কবে
অনিন্দিতা মুখ না খোলায়, এ বার ডামি হিসাবে ‘পুতুল’ ব্যবহার করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে চাইছে পুলিশ। আশা, তাতে অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে ঘটনার সময় অনিন্দিতার অবস্থান কেমন ছিল।
অনিন্দিতা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বয়ান দিয়েছেন বলে আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। প্রথমে তিনি বলেছিলেন, মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান রজতকে। পরে বলেন, রজত গলায় চাদর পেঁচিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ঘটনার এক সপ্তাহ পর, গত ১ ডিসেম্বর, শনিবার দিনভর জেরার মুখে অনিন্দিতা খুনের কথা স্বীকার করেছিলেন বলে জানিয়েছিল পুলিশ। চাদরের মধ্যে মোবাইল চার্জারের তার জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিলেন বলেও নাকি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন তিনি।
কিন্তু আদালতে একদম উল্টো কথাই বলেন অনিন্দিতা। সরাসরি অস্বীকার করেন খুনের কথা। ফলে আবার বিপাকে পড়ে যান তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই রজত দে-র মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা জোরাল হয়েছে। অনিন্দিতার একার পক্ষে রজতকে খুন করা অসম্ভব বলেই মনে করছে তদন্তকারী অফিসারেরা। ঘটনার একদিন আগে পুত্র সন্তান এবং পোষা কুকুরকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রজতকে খুন করার উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পনা করেই এ সব করা হয়েছিল? এখনও উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নথিতে ‘গরিব মানুষ’ বরো চেয়ারম্যানও!
এ দিকে মঙ্গলবার অনিন্দিতার আইনজীবী দাবি করেছেন, তাঁকে অনিন্দিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি নিউটাউন থানাতে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
জটিল পরিস্থিতেতে, এ বার নমুনা সংগ্রহ করতে ফের ঘটনাস্থলে যেতে পারে ফরেন্সিক দল। রজত খুন কার্যত এখনও রহস্যঘেরাই রয়েছে। তৃতীয় ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা থাকলেও, নির্দিষ্ট করে পুলিশ এখনও কাউকে জেরা করে উঠে পারেনি। এক তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য, ওই ব্যক্তিকে আড়াল করতে চাইছেন অনিন্দিতা।
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজজানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)