আদালতের সওয়ালের মুখে কমলাকান্ত বলেছিলেন, উকিল চেনা যায় শামলায়। পুলিশকেও যে চেনা যায় তার উর্দিতে তা ফের প্রমাণ হল সোমবার রাতে সল্টলেকের ঘটনায়। উর্দি না থাকায় ডাকাত সন্দেহে সেখানে মার খেতে হল এক সিভিক পুলিশকে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে ফের লেকটাউন ট্রাফিক গার্ডে প্রহৃত হন এক এএসআই। দু’টি ঘটনাতেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম, তাপস মুখোপাধ্যায় এবং সঞ্জয় রায়চৌধুরী।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে সল্টলেকের এসি ব্লকে টহল দিচ্ছিলেন তিন জন সিভিক পুলিশ। এক সিভিক পুলিশ নজরদারির জন্য একটি এটিএমে ঢোকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাকি দুই সিভিক পুলিশও সেখানে হাজির হন। এর পরে তারা তিন জন এটিএমের সামনেই কিছুক্ষণ বসেছিলেন। রাত দেড়টা নাগাদ ওই তিন সিভিক পুলিশের গতিবিধি দেখে যে বাড়ির তলায় এটিএম তার বাসিন্দা তাপস মুখোপাধ্যায়ের ভ্রম হয় ডাকাতি হচ্ছে বলে। তিনি বাড়ি থেকে নেমে চিৎকার জুড়ে দিন। যুবকেরা নিজেদের সিভিক পুলিশ বলে পরিচয় দিলেও তাপসবাবু তা মানতে চাননি। তাই নিয়ে সিভিক পুলিশদের সঙ্গে তাপসবাবুর বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, তখন তিনি সেলিম শেখ নামে এক সিভিক পুলিশের গায়ে হাত তোলেন। পরে খবর পেয়ে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ গিয়ে তাপসবাবুকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে তোলা হলে তিনি জামিন পান।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সিভিক পুলিশের আলাদা পোশাক না থাকায় তাঁদের পুলিশ বলে চিহ্নিত করা মুশকিল। ফলে তাপসবাবুর আচরণে অন্যায় দেখছেন না বাসিন্দাদের একাংশ। পুলিশের অবশ্য দাবি, রাতে এটিএমে রক্ষীরা ঠিক মতো নজর রাখছেন কি না, তা দেখার জন্য সিভিক পুলিশ নজরদারি চালায়। বিধাননগরের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ব্লকে ব্লকে রাতে নজরদারি রাখার কাজ করছে সিভিক পুলিশ। ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে।’’
তবে এখনও সল্টলেকে বহু এটিএমে রক্ষী থাকছে না, এটাও স্পষ্ট হয়েছে। সেই বিষয়ে পুলিশের একাংশের দাবি, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে এর আগেও রক্ষী নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। তার পরেও একাংশের হুঁশ ফিরছে না।
অন্য দিকে মঙ্গলবার সকালে লেকটাউন ট্রাফিক গার্ডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের কাজে ছিলেন এএসআই সুনীল কর্মকার। পুলিশ জানায়, তখন পাটুলির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়চৌধুরী বাগুইআটি যাওয়ার সময়ে দমদম পার্কের কাছে সিগন্যাল ভাঙেন। অভিযোগ, সুনীলবাবু গাড়ি আটকালে সঞ্জয় হম্বিতম্বি করেন। শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, সঞ্জয় গালিগালাজ দেন এবং ওই এএসআইয়ের গায়ে হাত তোলেন। লেকটাউন থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।