শেখ আবদুল্লা সর্দার
জোড়া দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল দমদম এলাকায়। শনিবার সকালে ভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া দু’টি দেহই মিলেছে কাছাকাছি এলাকার মধ্যেই। দু’টি ঘটনার তদন্তে নেমেছে দমদম থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথম দেহটি উদ্ধার করা হয় শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ, দক্ষিণ দমদম পুরসভার এলাকার শূরের মাঠ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকা এই শূরের মাঠের এক দিকে ঘাস দিয়ে চাপা দেওয়া ছিল দেহটি। শনিবার সকালে এলাকারই দু’টি বাচ্চা সেখানে খেলতে গিয়ে প্রথমে দেখতে পায় ঘাসের আড়াল থেকে বেরিয়ে রয়েছে দু’টি পা। তারা ভয় পেয়ে খবর দেয় অন্যদের। স্থানীয়েরাই সেই খবরটি পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে সেখান থেকে ক্ষত-বিক্ষত দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, দেহটির মাথায় গভীর ক্ষত ছিল। গলার নলি কাটা ছিল। চোখে এবং বুকেও গভীর ক্ষত মিলেছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কিশোরের নাম শেখ আবদুল্লা সর্দার। তার বয়স আনুমানিক ষোলো। স্থানীয় শ্রীকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সে। স্কুলে পড়ার ফাঁকে এলাকার বাড়ি থেকে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করত সে। দমদমেরই মেলার বাগান এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, বৃহস্পতিবার থেকে নিরুদ্দেশ ছিল ছেলেটি। তবে পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই এলাকায় আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কিশোরের মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করে গলার নলি কাটা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, রহস্য মৃত্যুর প্রকৃতি দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে পেশাদার কোনও লোকের কাজ নয় এটি। তবে কী ভাবে
ওই কিশোরের মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহটি যেখানে পড়েছিল, সেটি ফ্রি-ওয়াইফাই জোন বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, একটি সূত্র থেকে খবর মিলেছে, সম্ভবত কারওর সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিল ওই কিশোর। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করলেও সব তথ্য যাচাই করে তদন্ত করছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কিশোরের দেহ উদ্ধারের ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই এ দিন হনুমান মন্দির সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে আরও এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীই প্রথমে একটি দেহ ভাসতে দেখেন পুকুরে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম অজয় দেব (৪৫)। তিনি আগে হনুমান মন্দির সংলগ্ন এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। কিন্তু গত ছ’মাস তাঁকে ওই এলাকায় দেখা যায়নি। ওই ব্যক্তি কোনও ভাবে নিজেই পড়ে গিয়েছেন, না কি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে তা জানতে পুলিশ তদন্ত
শুরু করেছে।