ঘুপচি ঘরের কোণে বসে থাকা যুবকের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠেছিলেন তিলজলা থানার পুলিশকর্মীরা। হাতে-পায়ে দড়ি বাঁধা, চোখে অস্বাভাবিক চাহনি। কাছে গিয়ে দেখেন, কব্জির কাছে দড়ি বাঁধনের চোটে হাত কালো হয়ে গিয়েছে!
বছর তিরিশের যুবককে এ ভাবে কে বেঁধে রাখল, তা বুঝতে পারেননি পুলিশ অফিসারেরা। তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানতে পারেন, শেখ ফারুখ নামে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। সুযোগ পেলেই ঘর ভাঙচুর করেন তিনি। নিজেকেও নানা ভাবে জখম করেন। চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য না থাকায় বাধ্য হয়ে বেঁধে রেখেছেন মা।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে ওই বৃদ্ধার সমস্যার কথা শুনে মঙ্গলবার রাতে খোঁজখবর করতে গিয়েছিল তারা। কিন্তু সেখানে বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলের অসহায় পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করা হয়। যোগাযোগ করা হয় এক়টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও। তার পর স্বরাজ দাস এবং উজ্জ্বল সরকার নামে দুই সাব-ইনস্পেক্টর এবং ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা যুবককে বাঁধনমুক্ত করে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে কসবার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে উদ্ধার করে মানসিক হাসপাতালে পাঠাতে পারে না পুলিশ। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শপত্র আদালতে পাঠিয়ে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়। ফারুখের ক্ষেত্রেও সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তিলজলা থানার এই মানবিক পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন পুলিশকর্তারাও। তাঁরা বলছেন, অপরাধ দমন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বাইরেও সামাজিক ক্ষেত্রে পুলিশের যে অবদান রয়েছে, এই ঘটনায় তা প্রমাণিত।