দীনেশ্বর দাস
মিলেনিয়াম পার্কের সামনে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্টের কাছে হঠাৎ এগিয়ে এসে ‘চোর’ ধরে দিতে বলেছিলেন সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা এক যুবক। প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পর ক্ষণেই ওই অফিসার জানতে পারেন, ওই যুবকের এক বন্ধুর বাড়িতে কয়েক দিন আগে চুরি হয়েছে। খোয়া গিয়েছে একটি আইফোন। আর চুরি যাওয়া সেই মোবাইল কিছু ক্ষণের জন্য ‘অন’ হতেই তার অবস্থান দেখা গিয়েছে পুলিশের কাছে আসা ওই যুবকের আইফোনে।
সেই ‘লোকেশন’ দেখে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট বুঝতে পারেন, জায়গাটি মিলেনিয়াম পার্কের পার্কিং লট। সেখানে নির্দিষ্ট দশ মিটার এলাকার মধ্যে থাকা একটি গাড়িতে চুরি যাওয়া আইফোনের লোকেশন দেখা যাচ্ছে। এর পরে সেই সূত্র ধরে ওই গাড়ির চালককে পাকড়াও করতেই উদ্ধার হয় মোবাইলটি। গত রবিবার সাউথ এন্ড পার্কের একটি ফ্ল্যাট থেকে চুরির ঘটনায় জড়িত এক জনকে এ ভাবেই শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার করল পুলিশ। ট্র্যাফিক সার্জেন্টের কাছে সাহায্য চাওয়া ওই যুবকের আইফোনে একটি বিশেষ ধরনের অ্যাপ রয়েছে। চুরি যাওয়া অন্য আইফোনটি কয়েক মিনিটের জন্য অন হতেই তা দেখা গিয়েছিল সেই অ্যাপে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ মিলেনিয়াম পার্কের সামনে ডিউটি করছিলেন হেড কোয়ার্টার্স ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সুব্রত বিশ্বাস। সেই সময়েই হন্তদন্ত হয়ে তাঁর কাছে এসে বিবেক নামের ওই যুবক চুরির বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে আইফোনের লোকেশনের কথাটি বলেন। বিবেক ওই অফিসারকে জানান, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ ১০ মিনিটের জন্য খোয়া যাওয়া আইফোনটি অন করা হয়েছিল। যার লোকেশন দেখা গিয়েছে মিলেনিয়াম পার্কের পার্কিং লটের একটি গাড়িতে। এর পরেই সেখানে ঢুকে গাড়িটিকে দেখতে পান সুব্রতবাবুরা। গাড়ির চালককে ডেকে আইফোনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে সে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করে।
পুলিশ জানায়, এর পরে পার্কিং লটের সামনে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে খোঁজ করতেই জানা যায়, এ দিন সকালে ওই গাড়ির চালকই একটি দামি মোবাইল বিক্রির চেষ্টা করছিল। এর পরে ফের ওই চালককে পাকড়াও করে জেরা শুরু করেন ওই ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরে চাপ দিতেই সে আইফোনটি বার করে দেয়। খবর পেয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ এসে দীনেশ্বর দাস নামে ওই চালককে আটক করে। পরে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গত রবিবার বিবেকের বন্ধু, সাউথ এন্ড পার্কের বাসিন্দা এক যুবকের ফ্ল্যাটে চুরি হওয়ার পরে ওই থানাতেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। জানলার গ্রিল কেটে ঢুকে দুই চোর ওই আইফোনের সঙ্গে ল্যাপটপ, রুপোর বাসনপত্র, গয়না, নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছিল।