খোয়া যাওয়া ব্যাগটি চৈতালী এবং বুবাইয়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বেলা তিনটের মধ্যে ট্রেন ধরে কৃষ্ণনগর পৌঁছতে হবে। সরকারি চাকরির পরীক্ষা রয়েছে। অথচ ফেলে আসা ব্যাগের জন্য বাসের পিছনে ধাওয়া করে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দম্পতি। মাঝেরহাট থেকে কালীঘাট ঘুরে অবশেষে সমস্যা মিটল বেলা বারোটা নাগাদ। মুকুন্দপুরে ওই দম্পতির হাতে হারানো ব্যাগ তুলে দিলেন যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসারেরা।
ব্যাগের মালিক বুবাই অধিকারী হাঁফ ছেড়ে বলেন, ‘‘পুলিশ কর্মীদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এ বার আমার স্ত্রী পরীক্ষা দিতে পারবে।’’ পাশে দাঁড়ানো বুবাইয়ের স্ত্রী চৈতালীদেবী কেঁদেই ফেললেন। বললেন, ‘‘চাকরির খুব দরকার। এ বার পরীক্ষা দিতেই হত। এখন দ্রুত পৌঁছতে হবে।’’
চৈতালী এ দিন জানিয়েছেন, কৃষ্ণনগর স্টেশনের কাছের এক স্কুলে শনিবার বেলা তিনটে থেকে পরীক্ষা ছিল তাঁর। সে জন্য ভোরে স্বামীর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা চৈতালী। প্রথমে আমতলা-মুকুন্দপুর রুটের বাসে ওঠেন তাঁরা। ঠিক ছিল মাঝেরহাট স্টেশন নেমে কৃষ্ণনগরের ট্রেন ধরবেন। কিন্তু, ট্রেন থেকে নেমে হঠাৎ খেয়াল হয় তাঁদের ব্যাগটি বাসেই ফেলে এসেছেন। ওই ব্যাগেই রয়েছে পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত নথি। এর পর একটি ট্যাক্সিতে উঠে বাসটির খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। যদিও বাসের দেখা মেলেনি।
এর পর কালীঘাটে পৌঁছে পুলিশে জানান চৈতালীরা। সেখান থেকে খবর যায় ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে। যে হেতু বাসটি মুকুন্দপুর যাচ্ছিল, তাই জানানো হয় পূর্ব যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের অ্যা়ডিশনাল ওসি মলয় রায়কে। তিনি এবং তাঁর সঙ্গী সার্জেন্ট দীপঙ্কর সাহা মুকুন্দপুর স্ট্যান্ডে বাসটির খোঁজ পান। উদ্ধার হয় ব্যগটি। ফোনে যোগাযোগ করে তা তুলে দেওয়া হয় দম্পতির হাতে।
পরীক্ষা দিতে ঢোকার আগে চৈতালী বলেন, ‘‘পাশ করে চাকরি পেলে ওই পুলিশকর্মীদের আমরা মিষ্টি খাওয়াব।’’ আর মলয়বাবুর পরামর্শ, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিয়ে যাতায়াত করার সময়ে চৈতালীদেবীরা আরও সচেতন হোন।