Police

হদিস বেআইনি বাজির গুদামের

বৃহস্পতিবার আগুন লাগতেই জানা গেল পোশাক নয়, সেখানে মজুত করা হত আতসবাজি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৭
Share:

বিপত্তি: আগুন নেভানোর পরে বাজির প্যাকেট বার করছেন দমকলকর্মীরা। বৃহস্পতিবার, বীরপাড়া লেনে। নিজস্ব চিত্র

বেশির ভাগ সময়েই রাতের দিকে আসত লরি। বস্তা নামিয়ে ঢোকানো হত আবাসনের গ্যারাজে। স্থানীয়েরা ভাবতেন, বস্তায় রয়েছে জামাকাপড়। কিন্তু বৃহস্পতিবার আগুন লাগতেই জানা গেল পোশাক নয়, সেখানে মজুত করা হত আতসবাজি। পুলিশ জানিয়েছে, গ্যারাজটি ওই আবাসনের প্রোমোটারের। তাঁর খোঁজ চলছে।

Advertisement

চিৎপুর থানার বীরপাড়া লেনের একটি চারতলা আবাসনের গ্যারাজ ব্যবহার করে এমন ভাবেই চলছিল বাজির গুদাম। এ দিন দুপুরে সেখানেই আগুন লাগে। আতঙ্কে আবাসন খালি করে রাস্তায় নেমে পড়েন বাসিন্দারা। প্রথমে স্থানীয় যুবকেরা, পরে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন এসে আগুন পুরোপুরি নেভায়। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর না থাকলেও ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে প্রায় এক বছর ধরে কী ভাবে ওই বাজির গুদাম চলছিল তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।

কলকাতা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম হালদার বলেন, ‘‘ওই গ্যারাজের আশেপাশে যাঁরা থাকেন তাঁরাও জানতেন না বাজি মজুত করা রয়েছে। বাজির গুদাম করতে গেলে যা যা পরিকাঠামো থাকা দরকার, তার কিছুই এখানে নেই। গুদামটি সিল করার জন্য পুলিশকে বলেছি।’’

Advertisement

স্থানীয়েরা জানান, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শাটার বন্ধ ওই গুদাম থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয়েরা। ক্রমশ সেই ধোঁয়া আবাসনের উপরের তলাতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ওই আবাসন লাগোয়া রয়েছে কেরোসিনের গুদাম, উল্টো দিকে রয়েছে প্লাস্টিকের গুদাম। তাই আগুন ভয়াবহ আকার নিতে পারে আশঙ্কা করে স্থানীয় যুবক ও আবাসনের কয়েক জন বাসিন্দা মিলে গুদামের শাটার ভেঙে ফেলেন। স্থানীয় যুবক সত্যজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শাটার ভেঙে ভিতরে ঢুকে চমকে উঠি। দেখা যায় ভিতরে আতসবাজি ঠাসা। কোনও মতে ঢুকে দেখা যায় শেষ প্রান্তে ডাঁই করে রাখা চাইনিজ ফানুস ও প্লাস্টিকের বন্দুকের বস্তায় আগুন লেগেছে।’’

স্থানীয়দের চেঁচামেচিতেই আবাসিকেরা জানতে পারেন বাজিতে আগুন লেগেছে। এর পরেই সকলে হুড়মুড়িয়ে নীচে নামতে শুরু করেন। ওই গুদামের উপরের তলাতেই থাকেন স্বরূপ কর্মকার। তিনি বলেন, ‘‘ধোঁয়ায় ঘর ভরে গিয়েছিল। বুঝতে পারছিলাম আগুন লেগেছে। কিন্তু যখন শুনলাম বাজির গুদামে আগুন, তখন আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে রাস্তায় চলে আসি।’’ স্বপনবাবুর শাশুড়ি বাহাত্তর বছরের চন্দনা বড়ুয়া শয্যাশায়ী। তাঁকে পাঁজাকোলা করে নামিয়ে আবাসনের উল্টোদিকের একটি ঘরে রাখা হয়।

এ দিন ঘটনাস্থলে আসেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘‘ঘিঞ্জি এলাকায় এ ভাবে গ্যারাজকে বাজির গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেটা ঠিক নয়। ওই গুদামের মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন