৬০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কিনারা ডাকাতির

লালবাজার সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। এর পরেই সোনা-ডাকাতির কিনারা করে পোস্তা থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দীর্ঘ তিরিশ কিলোমিটার রাস্তার ৬০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে সোনা-ডাকাতির কিনারা করে ফেলল পুলিশ। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই ডাকাতির ঘটনায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক জন জড়িত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনটা প্রথম বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রবীন্দ্র সরণির ফাঁকা রাস্তার ধারে কয়েক কেজি সোনা ভর্তি ব্যাগ পিঠে অ্যাপ ক্যাবের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোনার দোকানের এক কর্মী। আচমকাই তাঁর সামনে দাঁড়ায় বড় গাড়ি। এক যাত্রী নেমে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) অফিসার পরিচয় দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যুবককে গাড়িতে তুলে নেয়। এর পরে শোভাবাজার হয়ে হাওড়া স্টেশন। সেখান থেকে বম্বে রোডের ফুলেশ্বরের কাছে সোনা লুট করে যুবককে নামিয়ে দেয় যাত্রীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ অগস্ট।

লালবাজার সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। এর পরেই সোনা-ডাকাতির কিনারা করে পোস্তা থানার পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে ডাকাতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে চার জনকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের নাম সৌম্য ঘোষ, সৌরভ মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব দত্ত এবং কুন্তল নিয়োগী। বাজেয়াপ্ত হয়েছে লুট হওয়া সোনার বেশ কিছুটা। ধৃতেরা চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা। সৌম্যের এক দাদা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার। মূলত ওই দুই ভাইয়ের পরিকল্পনায় ডাকাতির জন্য বাকিদের নিয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। আরও তিন অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, গয়না বানানোর জন্য কারিগরদের হাতে পৌঁছে দিতে চেন্নাইয়ের বাসিন্দা, সোনা ব্যবসায়ী সুরেন্দ্র কাটারিয়া উত্তরপাড়ার বাসিন্দা বিষ্ণুকান্ত শর্মাকে প্রায় দু’কেজি সোনা দিয়েছিলেন। প্রতি সন্ধ্যায় ব্যাগে ভরে ওই সোনা কারিগরদের কাছে পৌঁছে দিতেন বিষ্ণুকান্ত। পুলিশকে সুরেন্দ্র জানান, ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় মালিকের সঙ্গে কথা বলে বিষ্ণুকান্ত ব্যাগে সোনা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ জন্য রবীন্দ্র সরণির একটি বহুজাতিক বিপণির কাছ থেকে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্যাব বুক করেন তিনি। ওই সময়েই ঘটনাটি ঘটে। বিষ্ণুকান্তের দাবি, চোখে কাপড় বাঁধা থাকায়, কোন রাস্তা দিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা বুঝতে পারেননি তিনি।

ঘটনার পরদিন পোস্তা থানায় অভিযোগ দায়েরের পরেই ডিসি (মধ্য) নীলকান্ত সুধাকরের নির্দেশে ওসি সরল মিত্রের নেতৃত্বে তিন অফিসার জয়ন্ত সরকার, অমিতেশ বালা এবং সুমন বিশ্বাসকে নিয়ে বিশেষ দল বা সিট গঠন হয়।

তাঁরা রবীন্দ্র সরণির ওই বিপণির সিসি ক্যামেরা থেকে গাড়ির খোঁজ পায়, তবে নম্বর পায়নি। এর পরেই শোভাবাজার-এমজি রোড হয়ে হাওড়া স্টেশন এবং তার পরে ফোরশো রোড থেকে ধূলাগড় টোলপ্লাজা পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখে। টোলপ্লাজা থেকে গাড়িটির তিনটি সংখ্যা মেলে। একটি পেট্রোল পাম্প থেকে বাকি সংখ্যাগুলি পাওয়া যায়।

এর পরেই মালিকের সন্ধান মেলে। জানা যায়, মালিক গাড়িটি চন্দননগরের বাসিন্দা সৌরভকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে শুক্রবার রাতে সৌরভকে পাকড়াও করতেই বাকিদের সন্ধান পান তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন