থানা প্রাঙ্গণে বাগান। নিজস্ব চিত্র
থানার পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে গঙ্গা। গাছগাছালিতে ভরা থানায় এই শীতে আসছে নানা পাখি। কংক্রিটের শহরের মধ্যে কোনও থানার ছবি যে এ রকম হতে পারে, তা দেখে খুশি খোদ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী। তাঁর কথায়, ‘‘গাছ লাগিয়ে নাদিয়াল থানা যে ভাবে পরিবেশ রক্ষার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে তা অন্য থানার অনুসরণ করা উচিত।’’
দক্ষিণ শহরতলির বন্দর এলাকায় এই নাদিয়াল থানা। অতীতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীনে থাকলেও এখন নাদিয়াল থানা কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ। নাদিয়াল থানায় ঢোকার মুখে নিম, নারকেল, পেঁপে, আম, পেয়ারা, জলপাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফুলের গাছ রয়েছে। ওসি অনির্বাণ দত্তের কথায়, ‘‘কেবল থানা চত্বরেই নয়, এ বার আমরা থানার অধীন বিভিন্ন এলাকায়ও গাছ লাগাব। ভাঙাখাল, রিভারসাইড রোড, ডক্টর এ কে রোডের কিছু অংশ, আদি শ্মশান কালীঘাটের কাছাকাছি দেবদারু, শিরীষ, বট ও নিম গাছ লাগানো হবে।’’ ওসি-র কথায়, ‘‘এত গাছ থাকায় ফিঙে, দোয়েল, ঘুঘু, বুলবুলি, টিয়াপাখি দেখা যায় প্রচুর।’’
নাদিয়াল থানায় গিয়ে দেখা গেল, থানার সামনেটা গাঁদা, জিনিয়া, সূর্যমুখী, গোলাপ বিভিন্ন ফুলের চাষ হচ্ছে সেখানে! থানায় অভিযোগ জানাতে এসে এলাকার এক বাসিন্দা বলছিলেন, ‘‘থানা-পুলিশ শুনলেই সাধারণ মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নেন। কিন্তু নাদিয়াল থানায় এসে ধারণাটা বদলে যাবে।’’
শহরের বুকে সবুজায়ন ফেরানোর পাশাপাশি দূষণ রোধে ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের নামকরণ করেছেন। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সবুজায়ন রক্ষাও পুলিশের কর্তব্য। পাশাপাশি থানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও জরুরি। তাতে পরিবেশ সুন্দর লাগে। আমরা এ বার থেকে ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’ প্রকল্পে উৎসাহিত করতে থানাগুলিকে পুরস্কৃত করব।’’