দুর্ঘটনার রাতে সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যু ঠিক কী ভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটাতে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে গিয়ে ঘটনাক্রমের পুনর্নির্মাণ করতে চায় পুলিশ।
ভোরের দিকে যে সময়ে ওই ঘটনা ঘটেছিল, ঠিক সেই সময়েই বিক্রমকে সেখানে নিয়ে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাহায্যে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। ২৯ এপ্রিল ভোরে লেক মার্কেটের সামনে দুর্ঘটনায় চালকের আসনে থাকা বিক্রম প্রাণে বাঁচলেও পাশের সিটে বসা সোনিকা মারা যান। সেই ঘটনায় পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে অবহেলার জেরে মৃত্যু ঘটনার মামলা দায়ের করেছিল।
পুলিশের অভিযোগ, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রতি বার জেরায় নিজের বয়ান বদলেছেন বিক্রম। জোরে গাড়ি চালানো ও মদ্যপানের কথা অস্বীকার করেন প্রথমে। পরে জেরায় নতুন তথ্য দেন অভিযুক্ত। বলেন, মদ্যপান করলেও তিনি নেশাগ্রস্ত হননি। গাড়িটির ফরেন্সিক তদন্তে দ্রুত গতি ও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠে আসার পরে ফের মত বদল করেন বিক্রম।
আরও পড়ুন:সমন্বয় বাড়াতে চান মেট্রো রেলের জিএম
বিক্রম বারবার মত বদল করায় দুর্ঘটনার সময়ে কী ঘটেছিল, তা জানার জন্যই ঘটনার পুনর্নির্মাণ জরুরি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। প্রথমে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের কাজে ঢিলে দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ ওঠায় পুলিশ নড়েচড়ে বসে। সোনিকার বাবা-মা পুলিশের বিরুদ্ধে বিষয়টি হাল্কা করে দেখার অভিযোগ তোলার পরে পুলিশ আরও চাপে পড়ে যায়। পুলিশের এক অফিসার বলেন, সোনিকার পরিবার বা বন্ধুরা যদি পুলিশি ভূমিকা নিয়ে আদালতে মামলা করেন, তা হলে লালবাজারেরই নাক কাটা যাওয়ার প্রভূত আশঙ্কা রয়েছে।
সোমবার আলিপুর আদালত থেকে বিক্রম ও সোনিকার চার বন্ধুর গোপন জবানবন্দি সংগ্রহ করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, চার বন্ধুই দুর্ঘটনার আগে হোটেলে মদ্যপান করতে দেখেছিলেন বিক্রমকে। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, গোপন জবানবন্দি ও ফরেন্সিকের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে বিক্রমের বিরুদ্ধে নতুন ধারা সংযোজন ও তাঁর জামিন বাতিলের আর্জি জানানো হতে পারে। আজ, মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে সেই আবেদন করার কথা তদন্তকারীদের। তদন্তের স্বার্থে দ্রুত ঘটনার পুনর্নির্মাণ সেরে ফেলতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত গা়ড়ি ও বিক্রমের রক্ত পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট ফরেন্সিক বিভাগ থেকে আসেনি। এখনও পর্যন্ত পুলিশ ২০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের মধ্যে বিক্রম-সোনিকার বন্ধুরা ছাড়াও রয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েক জন।