মিছিলের ত্র্যহস্পর্শে শহরের নাভিশ্বাস

সকালে হাওড়া থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ। দুপুরে কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা। বিকেলে এন্টালি থেকে বেলেঘাটা। তিনটি মিছিল ত্রিফলার মতো সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে মহানগরের যানশাসনের দফারফা করে দিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৫
Share:

জট-জ্বালা। সোমবার, এস এন ব্যানার্জি রোডে। — নিজস্ব চিত্র

সকালে হাওড়া থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ। দুপুরে কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা। বিকেলে এন্টালি থেকে বেলেঘাটা। তিনটি মিছিল ত্রিফলার মতো সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে মহানগরের যানশাসনের দফারফা করে দিল। সোমবার প্রায় গোটা মধ্য কলকাতা এবং দক্ষিণ, মধ্য ও কলকাতার পূর্ব একাংশ ওই যানজটের কবলে পড়ার ফলে ব্যস্ত সময়ে কার্যত গোটা শহরই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

Advertisement

লালবাজার কন্ট্রোল রুমের হিসেবে, তিনটি মিছিলের প্রতিটিতেই তিন হাজারের বেশি লোক ছিল। লোকসংখ্যা এত বেশি হওয়ায় রাস্তার এক দিক দিয়ে মিছিল, অন্য দিক দিয়ে যানবাহনের ফর্মুলাও কাজ করেনি। চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন পথে বেরোনো মানুষ।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলা ১১টা নাগাদ সারা বাংলা কুষ্ঠ সমিতির তরফে হাওড়া স্টেশন থেকে মিছিল শুরু হয়। হাওড়া ব্রিজ, ব্রেবোর্ন রোড, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট হয়ে মিছিল ১২টা নাগাদ পৌঁছয় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। সেখানে রাস্তার এক দিক বন্ধ রেখে বিকেল ৩টে পর্যন্ত চলে সভা। মিছিল ও সভার জেরে ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, লালবাজার স্ট্রিটে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রভাব পড়ে লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মেয়ো রোড-সহ ধর্মতলা সংলগ্ন রাস্তার যানচলাচলেও। এসএসকেএমে ভর্তি আত্মীয়কে দেখতে এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হাওড়া থেকে বাসে ওঠেন শ্রীরামপুরের বিভাস সান্যাল। অন্য দিনের মতো মেরেকেটে আধ ঘণ্টার বদলে লেগে যায় এক ঘণ্টারও বেশি।

Advertisement

প্রথম মিছিলের জের কাটতে না কাটতেই দুপুর ২টো নাগাদ কলেজ স্ট্রিট থেকে দ্বিতীয় মিছিল। যার জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ‘ভাঙড় আন্দোলন সংহতি কমিটি’-র মিছিলটি শুরুর আগে অংশগ্রহণকারীদের ভিড়ে ১টা থেকেই কলেজ স্ট্রিট ও আশপাশের চত্বর থিকথিক করছিল। তখন থেকেই কলেজ স্ট্রিট ও লাগোয়া রাস্তাগুলিতে গাড়ির গতি মন্থর হয়ে পড়ে বলে জানায় পুলিশ।

মিছিল শুরুর পরে কলেজ স্ট্রিট-এম জি রোড মোড়, সূর্য সেন স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে যান চলাচল কিছুক্ষণ থমকে যায়। কলেজ স্ট্রিট, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন, এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে বিকেল ৩টে নাগাদ ধর্মতলায় পৌঁছয় মিছিল। প্রতিটি রাস্তাই যানজটের কবলে পড়ে। তার উপরে প্রায় আধ
ঘণ্টা ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং বন্ধ থাকায় সংলগ্ন সমস্ত রাস্তায় যানবাহন দাঁড়িয়ে যায়। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ভাঙড় আন্দোলন সংহতি কমিটির তরফে অবরোধকারীরা ডোরিনা ক্রসিং ঘেরাওমুক্ত করেন। কিন্তু যান চলাচল স্বাভাবিক হতে বিকেল চারটে পেরিয়ে যায়।

বিকেলে এন্টালি মার্কেট থেকে ফের একটি মিছিল শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সাড়ে ৫টা নাগাদ এন্টালি মার্কেট থেকে মৌলালি, বেলেঘাটা মেন রোড হয়ে মিছিল পৌঁছয় বেলেঘাটার ‘গাঁধী ভবন’-এ। বামফ্রন্টের ওই মিছিলের জেরে বিকেল থেকে সিআইটি রোড, মৌলালি, এজেসি বসু রোড, এপিসি রোড, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, বেলেঘাটা রোডে যানজট হয়। বেলেঘাটা রোড বন্ধ থাকায় রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র রোড দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ মিছিল ‘গাঁধী ভবন’-এ শেষ হলে ওখানে সভা করেন বাম নেতারা। সভা চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন