বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের ঘুনি বস্তি। —নিজস্ব চিত্র।
নিউ টাউনের ইকো পার্কের কাছে ঘুনি বস্তিতে বুধবার রাতে লাগা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণেআনতে বৃহস্পতিবার সকাল গড়িয়ে গেল। প্রায় দুই শতাধিক ঘর ভস্মীভূত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে প্রশাসন জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ত্রাণ, শীতবস্ত্র ও খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বুধবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
এরই মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এবং কেয়া ঘোষ এক্স হ্যান্ডলে এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।তাঁদের অভিযোগ, ঘুনি এলাকার অনেকের নাম বাদ পড়েছে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে। সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকেরা বসবাস করেন বলে দাবি তাঁদের।ওই নাগরিকদের একাংশ চলে গিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন তাঁদের নোটিস পাঠানোর আগেই এই অগ্নিকাণ্ড। অভিযোগ, আগুনে নথি নষ্ট হয়েছে,এইযুক্তিতে ফের তালিকায় নাম নথিভুক্ত করানোর পরিকল্পনায় এমন ঘটানো হয়েছে।
অভিযোগ খারিজ করে নিউ টাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, সাম্প্রদায়িক দল এমন কথাই বলে। তাঁর কথায়, যাঁরাবলছেন আগুন লাগানো হয়েছে, তাঁদের তদন্তের আওতায় আনা উচিত। শুধু সমাজমাধ্যমে না থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ান বিজেপির নেতারা। তাঁর দাবি, বিপর্যস্তদের ত্রাণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ওষুধেরব্যবস্থা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ইকো পার্কের ৫ নম্বর গেটের পিছনে রাজারহাটের জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ ঘুনি বস্তিতে আগুন ধরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। তাতে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা প্রথমেআগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। সরু রাস্তায় দমকলের ঢুকতে অসুবিধা হয়। পরে দফায় দফায় ২০টি ইঞ্জিন আসে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঁশের কাঠামো, ত্রিপলের ছাউনির অস্থায়ী ২০০টি ঝুপড়ি ভস্মীভূত হয়েছে।
ভস্মীভূত ঘরের এক বাসিন্দা আবুলহোসেনের সম্প্রতি হাত ভেঙেছে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু নিজের ওষুধ নিয়ে বেরোতে পেরেছি। বাকি সব শেষ।’’ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জাকির গাজি, মেহেরুন্নিসা বিবি, ময়না বিবিরা জানান, টাকাপয়সা শেষ। ত্রাণ পেলেও কী ভাবে সংসার চলবে, তাঁরা জানেন না।’’
দমকলমন্ত্রী জানান, দমকল ও পুলিশ যৌথ ভাবে ঘটনার তদন্ত করবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় বাসিন্দারা খুব সহযোগিতাকরেছেন। এ দিন সকালে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি ঘটনাস্থলে যান। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতেফরেন্সিক কর্মীরাও নমুনা সংগ্রহ করেন।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে