ED

ইডি গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে নিউটাউনের রাস্তায় লুঠ বর্ধমানের চাল ব্যবসায়ীকে

পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ধমানের গলসির বাসিন্দা পার্থ যশ একাধিক রাইস মিলের মালিক। ব্যবসা সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায় নামে কলকাতার এক ব্যক্তির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ১৮:১৬
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির গোয়েন্দা বলে পরিচয় দিয়ে, বর্ধমানের এক চালকলের মালিক এবং তাঁর ভাইকে নিউটাউনের রাস্তায় মারধর করে লুঠের ঘটনা ঘটল। ওই ব্যবসায়ী সোমবার নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও, এখনও ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ধমানের গলসির বাসিন্দা পার্থ যশ একাধিক রাইস মিলের মালিক। ব্যবসা সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায় নামে কলকাতার এক ব্যক্তির। পার্থবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, সুপ্রিয় নিজেকে চাল বিক্রির এজেন্ট হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল। কলকাতার এক রফতানিকারী কোম্পানির মাধ্যমে ২ কোটি টাকার চাল বিক্রির প্রস্তাবও দেয় পার্থবাবুকে।

সেই বিষয়ে কথা বলতে প্রথমে পার্থবাবু একা কলকাতায় আসেন। ক্যামাক স্ট্রিটে একটি কফি শপে সুপ্রিয় অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চাল রফতানির ‘ডিল’ পাকা করার কথা বলে। কমিশন হিসাবে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দাবি করে সুপ্রিয়। সেই টাকা পার্থবাবু অনলাইন ট্রান্সফার করে দেন। পার্থবাবুর অভিযোগ, এর পর দু’কোটি টাকার চাল রফতানির জন্য, দেড় কোটি টাকার ‘ক্রেডেনসিয়াল’ চাওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে। বলা হয় দেড় কোটি টাকার ডিমান্ড ড্রাফ্ট তৈরি করতে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ মোদী মন্ত্রিসভার, রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট রাজ্যপালের

চাল বিক্রির চুক্তি চূড়ান্ত করতে, এর পর পার্থ নিজের ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় আসেন। ক্যামাক স্ট্রিটেই তাঁরা দেখা করেন সুপ্রিয়র সঙ্গে। সুপ্রিয় বলে— রাজারহাটে যেতে হবে, সেখানেই একটি অফিসে চুক্তি সই হবে। পার্থবাবুর দাবি, তিনি নিজের গাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে তাঁকে বারণ করে সুপ্রিয়। অন্য একটি গাড়িতে করে পার্থ এবং তাঁর ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজারহাটে।

পার্থর অভিযোগ, হঠাৎ করেই সুপ্রিয় এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজন নিউটাউনের একটা ফাঁকা জায়গায় গাড়িটি দাঁড় করিয়ে দেয়। আর তার পরই সেখানে এসে দাঁড়ায় একটি লাল রঙের এসইউভি। এসইউভি থেকে চার-পাঁচ জন নেমে আসে এবং সুপ্রিয়দের গাড়ি থেকে জোর করে টেনে নামানো হয় পার্থবাবু এবং তার ভাইকে। সেই লাল গাড়িতে তুলেই দুই ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয় আর একটা ফাঁকা এলাকায়।

পার্থবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, লাল গাড়ি নিয়ে আসা ব্যক্তিরা নিজেদের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দা বলে পরিচয় দেয় এবং পার্থ বাবুর সঙ্গে থাকা বিভিন্ন নথি ছিনিয়ে নেয়। তার মধ্যে সই করা স্ট্যাম্প পেপার, নিজের কোম্পানির লেটারহেড, ৭টি ডিমান্ড ড্রাফ্ট ছাড়াও কোম্পানির বিভিন্ন নথি ছিল। পার্থবাবুর অভিযোগ, ওই ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে চলে যাওয়ার সময়, তাঁর ভাইয়ের হাতের সোনার আংটিও খুলে নেওয়া হয়। পুলিশকে পার্থবাবু জানিয়েছেন, ঘটনাটি অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে ঘটলেও, এত দিন ভয়ে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি।

আরও পড়ুন: সরকার গড়তে মাত্র এক দিন সময়! রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল ক্ষুব্ধ শিবসেনা

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, চাল রফতানির বিষয়টি পুরোটাই ভুয়ো। কারণ যে কোম্পানিগুলির নামে ডিমান্ড ড্রাফ্ট করতে বলা হয়েছিল পার্থবাবুকে, সেই কোম্পানিগুলোরই কোনও অস্তিত্ব নেই বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়েরও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। পুলিশ সুপ্রিয়র অ্যাকাউন্ট নম্বরের সূত্র ধরে তার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন