সকাল সওয়া ১০টা। একদল লোককে নিয়ে কাশীপুর থানায় ঢুকলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমুল। ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষের সামনে হাতজোড় করে তাঁরা বলতে থাকলেন, ‘‘স্যার, ভুল করেছি। আর আন্দোলনের সঙ্গে থাকতে চাই না।’’
আরাবুল বলেন, ‘‘বড়বাবু, এরা পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন। ভুল বুঝতে পেরেছেন। সকলেই শান্তিতে থাকতে চান।’’
শুক্রবার যে শ’খানেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন থানায়, তাঁরা ভাঙড়ের খামারআইট, মাছিভাঙা, স্বরূপনগর, উড়িয়াপাড়া, পদ্মপুকুর গ্রামের বাসিন্দা। সকলেরই দাবি, পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনে জড়িয়ে বড় ‘ভুল’ করেছিলেন। ভাঙড়ের রাজনীতিতে আরাবুলের বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত কাইজার আহমেদ। তিনিও সন্ধ্যায় শ’দুয়েক লোক নিয়ে হাজির হন থানায়। এফআইআর-এ নাম থাকায় তাঁদের কেউ এসেছিলেন আত্মসমর্পণ করতে। কেউ ‘ভুল’ বুঝতে পেরে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে চান বলে জানালেন পুলিশকে।
১৭ জানুয়ারি ভাঙড়ে গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে গোলমালে পুলিশের তরফে কয়েক জনের নামে অভিযোগ হয়েছিল। এফআইআর-এ নাম আছে, এমন কয়েক জন আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ জানায়, আন্দোলনের নামে জনজীবন বিপন্ন করা যাবে না।
আরাবুল-কাইজারদের নেতৃত্বে এই ঘটনাকে আমল দিতে রাজি নন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের বড় অংশ। ‘জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’র পক্ষে জানানো হয়, পুলিশি সহযোগিতায় আরাবুল ভয় দেখিয়ে লোক জড়ো করে থানায় নাটক করেছেন। বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বামফ্রন্টের বিধায়ক প্রতিনিধিদল, নানা সংগঠনের নেতারা মাছিভাঙা ও খামারআইটে যান। সুজনবাবু বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ আন্দোলনের সঙ্গেই আছেন। আন্দোলন দমাতে তৃণমূল এ সব করছে।’’