অক্সিটোসিনের উৎপাদনে কোপ, প্রশ্নে প্রসূতি-সুরক্ষা

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অক্সিটোসিন ওষুধ তৈরি করে দেশের মধ্যে বিক্রি করতে পারবে না। একমাত্র কর্নাটকের একটি সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অক্সিটোসিন তৈরি করতে পারবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৬
Share:

সন্তানপ্রসবের সময়ে মায়ের দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত রুখতে ব্যবহার করা হয় অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন। গরুর দুধ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এই ওষুধের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বারবার। তাই এই ওষুধ উৎপাদনে জারি হল নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এর জেরে প্রসূতিরা বিপদে পড়বেন, এই আশঙ্কায় সরব হয়েছে চিকিৎসকমহল।

Advertisement

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অক্সিটোসিন ওষুধ তৈরি করে দেশের মধ্যে বিক্রি করতে পারবে না। একমাত্র কর্নাটকের একটি সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অক্সিটোসিন তৈরি করতে পারবে। সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে কত অক্সিটোসিন প্রয়োজন, সেই হিসেব জমা দিতে হবে ওই সংস্থার কাছে। সেই মতো ওষুধ পৌঁছে যাবে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, গরুর গায়ে এই ইঞ্জেকশন দিয়ে দুধের মাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। এই অনৈতিক কাজ রুখতেই একাধিক জায়গায় ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জুলাই মাস থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। এর জেরে প্রসূতিদের বিপদ বাড়বে বলেই তাঁদের আশঙ্কা। চিকিৎসকেরা জানান, এ দেশে প্রসবকালে মায়েদের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হল অতিরিক্ত রক্তপাত। সেই বিপদ এড়াতেই এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। সরকারি-বেসরকারি মোট তিরিশটি সংস্থা এত দিন অক্সিটোসিন প্রস্তুত করে চাহিদা মেটাত। কিন্তু একটি মাত্র কোম্পানি এই ওষুধ তৈরি করলে সারা দেশের চাহিদা পূরণ হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বহুল প্রচলিত এই ওষুধ ছাড়াও রক্তপাত রুখতে আরও দু’টি ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু একটির দাম অক্সিটোসিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি, অন্যটির মান খারাপ। পাশাপাশি, অক্সিটোসিন সংরক্ষণ করা সহজ। এ দেশের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমে ওষুধ সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। তাই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যে সব ওষুধ রাখতে হয়, সেগুলির ব্যবহারে সমস্যা তৈরি হয়। সব দিক বিবেচনা করে অধিকাংশ চিকিৎসকই অক্সিটোসিন ব্যবহার করেন।

ইতিমধ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে চিকিৎসকমহল। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যালায়েন্স অব ডক্টরস ফর এথিক্যাল হেলথকেয়ার’-এর তরফে চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে সংস্থাকে ওষুধ উৎপাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার উপরে এই ওষুধের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হল। প্রসূতিদের স্বাস্থ্যে এর প্রভাব পড়তে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন