বাইশ বছর পকেট মেরে ইনি এখন লালবাজারের অস্থায়ী কর্মী!

একুশ বছর বয়সে পকেটমারিতে হাতেখড়ি। সঙ্গে মাদকাসক্ত হয়ে যাওয়া। তাঁর বিরুদ্ধে শহর জুড়ে শুধু পকেটমারির অভিযোগই শ’খানেক। প্রেসিডেন্সি জেলে টানা ছ’মাস হাজতবাস। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ফের কুকাজে ফেরা। টানা বাইশ বছর পকেটমারির পেশা ছেড়ে এখন লালবাজারের অস্থায়ী কর্মী তিনি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ১০:১০
Share:

দিলু আহমেদ

একুশ বছর বয়সে পকেটমারিতে হাতেখড়ি। সঙ্গে মাদকাসক্ত হয়ে যাওয়া। তাঁর বিরুদ্ধে শহর জুড়ে শুধু পকেটমারির অভিযোগই শ’খানেক। প্রেসিডেন্সি জেলে টানা ছ’মাস হাজতবাস। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ফের কুকাজে ফেরা। টানা বাইশ বছর পকেটমারির পেশা ছেড়ে এখন লালবাজারের অস্থায়ী কর্মী তিনি।

Advertisement

আট ও নয়ের দশকে চেতলার বাসিন্দা দিলু আহমেদকে কলকাতা পুলিশে এক ডাকেই চিনতেন সকলে। ১৯৮৫ সাল থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের বাসে পকেটমারির যে সমস্ত অভিযোগ আসত, তার বেশির ভাগ ঘটনাতেই দিলুর নেতৃত্বে গ্যাং কাজ করত বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর সেই গ্যাংয়ের মূল পাণ্ডা দিলু এখন চৌর্যবৃত্তি ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে। দিলুর রোজনামচাও এখন লালবাজারের পুলিশের মতোই। সকাল সাড়ে ন’টায় লালবাজারে হাজিরা। ওয়াচ সেকশনে এসে সাফাই সেরে চা তৈরি, তার পরে লকআপ থেকে বন্দিদের বার করা, আদালতে বন্দিদের নিয়ে যেতে পুলিশকে সাহায্য করা— সব কিছুতেই দিলু উপস্থিত। লালবাজারের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দিলু অনেক কনস্টবেলের থেকেও বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন।’’

আরও পড়ুন: বাড়ির ছাদের বাগানেই ফলছে ধান, সব্জি থেকে মাছ, বায়ো গ্যাসে হচ্ছে রান্নাও!

Advertisement

দিলুর কথায়, ‘‘টানা বাইশ বছর অন্যের টাকা লোপাট করেছি। দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজ করায় শেষ দিকে নিজেকেই ঘেন্না করত। মাস সাতেক আগে লালবাজারে লকআপে থাকার সময়ে সুস্থ জীবনে ফেরার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। ওয়াচ সেকশনের বড়বাবুর সাহায্যে আমি নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছি।’’

টানা বাইশ বছর কী ভাবে বাসের মধ্যে তার নেতৃত্বে চার জনের দল ধারালো ব্লেড দিয়ে ব্যাগ কেটে টাকা হাতিয়েছে, তা বলতে বলতেই চোখে জল চলে এসেছিল দিলুর। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘অন্য বন্দিদেরও দিলুর মতো মনের পরিবর্তন হোক, এটাই আমরা চাই। ইচ্ছে থাকলে যে নিজেকে বদলানো যায়, দিলু তা করে দেখিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন