নোটের চোটে কি কপাল খুলবে মশাদের?
নোট বাতিলের ঠেলায় এ বার সমস্যায় মশাবাহী রোগ নিবারণে সচেতনতার পদযাত্রাও। আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন এবং কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই মিছিল করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুর-প্রশাসন। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। মিলবে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের সহায়তায় গড়ে তোলা সোসাইটির অ্যাকাউন্ট থেকে। কিন্তু ভাবাচ্ছে সেই নোটের চোট। এক সপ্তাহে যে ২৪ হাজার টাকার বেশি মিলবেই না অ্যাকাউন্ট থেকে। তবে এত টাকা আসবে কোথা থেকে?
কর্মসূচির আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই। এ দিকে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ১৬ লক্ষ টাকার সবটাই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের গড়া সোসাইটির অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়ার কথা। এর মধ্যে প্রচার ও টিফিন খরচ রয়েছে। কিন্তু সপ্তাহে ২৪ হাজার টাকার হিসেবে চললে মাত্র ৪৮ হাজার টাকা মিলবে। যা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষের কাছে আবেদনও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সায় মেলেনি ব্যাঙ্কের। তবে কি হবে না পদযাত্রা? মেয়র পারিষদ অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, ‘‘যে ভাবেই হোক ওই কর্মসূচি পালন করবে পুরসভা। মশাবাহী রোগ নিবারণে মানুষকে সচতেন করতে এ ধরনের পদযাত্রা অতীতে কখনও হয়নি।’’
সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও কাজ না হওয়ায় ঠিক হয়েছে, টিফিনের খরচ চেকের মাধ্যমে মেটানো হবে। আর ১৪৪ টি ওয়ার্ডে প্রচারে অটো ভাড়ার জন্য যে টাকা লাগবে, তা দেওয়া হবে নগদে। তার পরিমাণও প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ। অতীনবাবু বৃহস্পতিবার জানান, পুরসভার ১৬টি বরোর এগজিকিউটিভ অফিসারেরা সম্মিলিত ভাবে ওই টাকা দেওয়ার জন্য ফের ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। এখনও তার জবাব আসেনি।
তবু মশা দমনে দমতে নারাজ পুরসভা। জানানো হয়েছে ২০১৭-র স্লোগান, ‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে সজাগ থাকুন বছরভর, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর।’ সেই স্লোগানেই শহরবাসীকে সচেতন করে তুলতে ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় পথে নামবেন রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রী-চিত্রতারকা থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষজন। পুরভবন থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচিতে অংশ নেবেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক মেয়র পারিষদ এবং কলাকুশলীবৃন্দ। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে নিজ নিজ এলাকায় ওই পদযাত্রায় অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মেয়র নিজেই এ বিষয়ে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধও জানিয়েছেন। প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। পথের কাঁটা একটাই, ব্যাঙ্কের ফরমান। নোটের চোটেই না বেঁচে যায় মশারা, চিন্তা পুরসভায়।