রূপান্তরকামীদের জন্য বৃদ্ধাশ্রমের প্রস্তাব মেলায়

যত দিন সম্ভব ভাত-কাপড়ের বন্দোবস্ত করেন নিজেরাই। কিন্তু বয়স বাড়লে শক্তি কমে আসে, ক্ষীণ হয় দৃষ্টি। পরিবার-পরিজনেদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যাওয়ায়, কোথায় যাবেন তার দিশা থাকে না অনেক ক্ষেত্রেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪২
Share:

সাজ: বডি আর্টের স্টলে রং-তুলি হাতে ব্যস্ত শিল্পী। সোমবার, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: সুমন বল্লভ

যত দিন সম্ভব ভাত-কাপড়ের বন্দোবস্ত করেন নিজেরাই। কিন্তু বয়স বাড়লে শক্তি কমে আসে, ক্ষীণ হয় দৃষ্টি। পরিবার-পরিজনেদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যাওয়ায়, কোথায় যাবেন তার দিশা থাকে না অনেক ক্ষেত্রেই। বাঁকা চোখে দেখা সমাজের একাংশও মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তাই বৃদ্ধ বয়সের আস্তানার দাবি নিয়ে এ বার রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রূপান্তরকামীরা। তার আগে সোমবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘জেন্ডার মেলা’-র এক আলোচনাসভায় সে কথা জানাল রূপান্তরকামীদের সংগঠন ‘আনন্দম’।

Advertisement

প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি সংগঠন ‘ইস্পাত’ এবং ‘আনন্দম’-এর যৌথ উদ্যোগে এ দিন থেকেই শুরু হয়েছে তিন দিনের মেলাটি। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রূপান্তরকামীরা নিজেদের হাতে তৈরি শীতলপাটি, কারুকার্য করা ব্যাগের স্টল দিয়েছেন। স্টল বসেছে মুখের উপরে ছবি এঁকে দেওয়ারও। তাঁদের সকলের উপস্থিতিতেই শুরু হয় আলোচনাসভা। সেখানেই স্বপ্নাবুড়ি নামের এক রূপান্তরকামী প্রস্তাব দেন, তাঁদের জন্য বৃদ্ধাশ্রম রাখা উচিত। না হলে জীবনের শেষ অধ্যায়ে গিয়ে তাঁদের কষ্টের সঙ্গে দিন কাটাতে হয়। এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেন উপস্থিত সকলেই। তখনই ঠিক হয়, কত সংখ্যক রূপান্তরকামী রয়েছেন, তার একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করা হবে। সেই সংখ্যার ভিত্তিতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে, যাতে বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের থাকার জন্য নির্দিষ্ট আস্তানার ব্যবস্থা হয়।

‘আনন্দম’-এর এক সদস্য বাপ্পা দাস উত্তর কলকাতায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তিনি জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। আর্থিক সংস্থান না থাকায় বন্ধু-বান্ধবদের সাহায্যে কোনও ভাবে দিন চলে। ‘ইস্পাত’-এর সম্পাদক আলোকপর্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে রূপান্তরকামীদের হাতের কাজের যে দক্ষতা, সেটা সকলের সামনে তুলে ধরতে। তা ছাড়া সচেতনতা প্রচার তো রয়েছেই।’’ আনন্দম-এর আর এক সদস্য সোমা রায় জানান, রূপান্তরকামীদের থাকার ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা ছিলই। এ বার বিষয়টি একটি নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। কত জন মানুষের এই ব্যবস্থা প্রয়োজন, তা আগে দেখা হবে। তার উপরে ভিত্তি করেই সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে।

Advertisement

এ দিনের আলোচনাসভায় দাবি করা হয়েছে যে, সরকারের কাছে তাঁদের বিষয়ে ঠিক তথ্য নেই। তাই রূপান্তরকামীরা সমস্ত পরিষেবা ঠিক মতো পান না। দ্রুত এই কাজ সম্পূর্ণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন