—প্রতীকী ছবি
সরু গলিটার যেন চেহারাই বদলে গিয়েছে! দেওয়ালে আঁকা রংবেরঙের অবয়ব। কিন্তু মণ্ডপের ভিতরে ঢুকতেই কেমন যেন ফ্যাকাশে চারপাশ! আলোতেও ঘোরের মতো পরিবেশ।
উত্তর কলকাতার নলিন সরকার স্ট্রিটের থিম এ বার সমাজের নেশা এবং অবসাদ। পুজোকর্তা সিদ্ধার্থ সান্যাল বলছিলেন, ‘‘কখনও নেশার জেরে চেপে বসে অবসাদ, কখনও আবার অবসাদ টেনে নিয়ে যায় নেশার পথে। তাই এটাকেই থিম হিসেবে বেছেছি।’’ শিল্পী অভিজিৎ ঘটক মণ্ডপকে ফুটিয়ে তুলতে বেছে নিয়েছেন ‘গ্রাফিতি’ বা দেওয়ালচিত্র। সরু গলির দু’পাশের বাড়ির দেওয়ালকেই ক্যানভাস হিসেবে বেছেছেন তিনি। বলছেন, ‘‘অনেক সময়েই রাস্তায়, দেওয়ালে মাদকাসক্তেরা দেওয়ালচিত্র করে। তার মধ্যেই ওঁদের মনের খুশি, দুঃখ, অবসাদ লুকিয়ে থাকে।’’ মণ্ডপের অন্দরসজ্জায় গাঁজার কল্কে, মূর্তি, বাতিল সার্কিট বোর্ড। মঙ্গোলীয় ধাঁচের প্রতিমার রঙে অবশ্য ঔজ্জ্বল্য রয়েছে।
হাতিবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপেও এ বার আসক্তির ছোঁয়া। তবে মাদকের নয়, প্রযুক্তির। পুজোর সম্পাদক শাশ্বত বসু বলছিলেন, ‘‘আমরা ক্রমশ প্রযুক্তির দাস হয়ে যাচ্ছি। এই আসক্তির জেরে ছোট ছেলেমেয়েরা মৃত্যুর দিকেও চলে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব। তাই আমাদের থিম এই আসক্তির কবল থেকে মুক্তি।’’ শিল্পী দেবজ্যোতি জানা ধাতু ও সুতোর বুনোনে জাল তৈরি করছেন। মণ্ডপের ভিতরে-বাইরে যেন সেই জাল আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে রাখছে মানুষকে। সেই জাল কাটিয়েই দর্শককে ঢুকতে হবে গর্ভগৃহে। সৌমেন পালের তৈরি প্রতিমায় ক্রোধের ভাব নেই। অসুরও এই আসক্তির কবল থেকে দুর্গার কাছে মুক্তির আর্জি জানাচ্ছে।
প্রতি বছরই বিভিন্ন ক্লাবের থিম নানা সামাজিক বার্তা দেয়। এ বার এই দুই পুজোর থিম কেমন সাড়া ফেলে, সেটাই দেখার!