প্রতীকী ছবি।
সামনে ৪৫ নম্বর রুটের বাস। গোলাঘাটা সার্ভিস রোডে সেটিকে ডান দিক দিয়ে পাশ কাটাতে গিয়ে সোমবার রাতে নির্মীয়মাণ ভূগর্ভস্থ পথের গর্তে পড়ে যায় হাওড়া থেকে বাগুইআটিগামী ৪৪ নম্বর রুটের বাস। রেষারেষি আটকাতে পদক্ষেপ কবে হবে, সেই প্রশ্ন তুলছে ভিআইপি রোডের এই দুর্ঘটনা।
গোলাঘাটা এবং শ্রীভূমিতে ভূগর্ভস্থ পথ নির্মাণের জন্য এক মাসেরও বেশি সময় ভিআইপি রোডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তার পরেও দুর্ঘটনা ঘটায় পুলিশ এবং পূর্ত দফতরের কর্তাদের অনুমান, সোমবার রাতে উল্টে যাওয়া বাসের গতিবেগ বেশি ছিল। সে জন্য গার্ডরেল, টিনের ছাউনি, বাঁশের ব্যারিকেডের পরে কুড়ি ইঞ্চির দেওয়াল ভেঙে বাস গর্তে পড়ে যায়। ভিড়ে ঠাসা বাস গর্তে পড়লে কী হত, তা ভেবে মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিধাননগর সিটি পুলিশের একাধিক কর্তা।
এ দিন বাসের কন্ডাক্টর রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘সামনে ৪৫ নম্বর রুটের বাস যাত্রী তুলছিল। অন্য রুটের একটা বাস ডান দিক কাটিয়ে বেরিয়ে গেল। আমরাও সে ভাবে বেরোতে গিয়ে বিপদ ঘটল। সকলকে নামালেও চালক রাজকুমার সাউ, এক যাত্রী বিজয় গোয়েল এবং আমি নামতে পারিনি। রাজকুমার ব্রেক কষেছিল বলে বড় কিছু ঘটেনি।’’ তবে রাকেশ রেষারেষির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্ষার আগে কাজ শেষ করতে উচ্চমানের কংক্রিট দিয়ে সাবওয়ের ছাদ ঢালাই করা হয়েছে। তাই প্রকল্পের ক্ষতি হয়নি। তবে ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিশেষ পরীক্ষা করা হবে।’’ ওভারটেক করতে গিয়ে যে এই দুর্ঘটনা, তা জানিয়ে বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজকুমার সাউ গ্রেফতার হয়েছে। গাড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় দুর্ঘটনা রোধে পুলিশের তরফে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আগামী দিনে ওখানে আলো এবং পুলিশকর্মী বাড়ানো হচ্ছে।’’ পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক আইনে বাসের চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে বাসের পারমিট বাতিলের সুযোগ রয়েছে।’’
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির তরফে রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেষারেষির একটা অন্য কারণ হল কমিশন প্রথা। আদায়ীকৃত ভাড়ার ৬ শতাংশ কন্ডাক্টর এবং ১২ শতাংশ চালক পাবেন, এই নিয়মের প্রভাব আছে। তবে সেটাই দুর্ঘটনার একমাত্র কারণ নয়। এত দিনের ব্যবস্থা একেবারে বদলাবে না। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’’ বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাসে বসেই যে কেউ বেপরোয়া গতির খবর যাতে অনলাইনে পাঠাতে পারেন, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেই যাত্রীর পরিচয় গোপন থাকবে।’’