ভরসা যখন গামলা। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। — নিজস্ব চিত্র
টার্মিনালে ঢুকতেই থমকে দাঁড়ালেন অভিজিৎ ঘোষ। দফতরের কাজে চেন্নাই যাচ্ছিলেন।
দেখেন, কলকাতা বিমানবন্দরের ঝা চকচকে নতুন টার্মিনালের মেঝেতে রাখা প্লাস্টিকের বড় একটি বাক্স। কনভেয়ার বেল্টে মাঝারি মাপের ব্যাগ চালান করার জন্য এই ধরনের বাক্স ব্যবহার করা হয়। দেখা গেল, ছাদ থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল পড়ছে মেঝেতে। সেই জল যাতে যাত্রীদের অসুবিধার কারণ না হয়, তার অভিনব এই ব্যবস্থা।
কাচে ঢাকা নতুন এই টার্মিনাল তৈরির পর থেকেই এই সমস্যা চলছে। বহু উঁচুতে ছাদ। সেখানে কাচের প্যানেল এমন ভাবেই জোড়া দেওয়া রয়েছে যে, অল্প বৃষ্টি হলেই সেই জোড়ের ফাঁক গলে জল এসে পড়ছে মেঝেতে। অভিজিৎবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বাক্স ছিল ইন্ডিগোর চেক-ইন কাউন্টারের সামনে। তাতে যাত্রীদের খুব একটা অসুবিধা হচ্ছিল না। শুধু দেখা যাচ্ছিল, ছাদ থেকে জল পড়ছে। কিন্তু নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ২৩ নম্বর গেটে যাত্রীদের নামার জায়গার মুখেও এ রকম একটি বাক্স রাখা ছিল। সেই জায়গাটি খুব সরু। সেই অঞ্চলটি পেরোনোর সময়ে টপ টপ করে জল পড়তে থাকে যাত্রীদের গায়েও।’’
এ দিনের বৃষ্টিতে শনিবারের বিমানবন্দরের টারম্যাকেও জল জমে যায়। এখানেই সমস্ত বিমান দাঁড়িয়ে থাকে। শনিবারের সেই জল রবিবার সকাল পর্যন্ত জমে ছিল। এমনকী, রবিবার বিকেলে চেন্নাই যাওয়ার পথে অভিজিৎবাবুও জল দেখতে পেয়েছেন টারম্যাকে। তাঁর কথায়, ‘‘এক-একটা গাড়ি গেলে মনে হচ্ছে মন্দারমণির সমুদ্রের মতো ঢেউ উঠছে।’’
শনিবার রাতে ৫৮ নম্বর পার্কিং বে-র সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ইন্ডিগোর বিমান। সেখানে জল জমে যাওয়ায় বিমানে উঠতে গিয়ে জুতো ভিজে যাচ্ছিল যাত্রীদের। পরে সেই বিমানটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৫০ নম্বর বে-তে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, রবিবার টারম্যাকের জল জমে থাকার জন্য কোনও উড়ান ছাড়তেই সমস্যা হয়নি। সকালের দিকে ৪৮ ও ৫৮ নম্বর বে-তে জল ছিল। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বাকি যেখানে জল জমেছে, সেখান থেকে বিমান ছাড়ে না। সেখান দিয়ে যাত্রীদের নিয়ে বাস যাতায়াত করে।
টারম্যাকের এই জমা জলের সমস্যা মেটাতে এর আগেও বৈঠক হয়েছে স্থানীয় পুরসভারগুলির সঙ্গে। এ বারেও আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানান বিমানবন্দরের এক কর্তা। টার্মিনালের ভিতরে যে জল পড়ছে, সে বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে।