CBI

রাজীবের কাছে ‘হার’ সব দিকেই, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিবিআই

সন্ধান তো মেলেইনি, উল্টে রাজীব নিরুদ্দেশে থেকেই ‘গ্রেফতারি এড়ালেন’। আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, রাজীবকে ধরতে গিয়ে সিবিআয়ের এ কূল-ও কূল— দুটোই গেল!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৫৮
Share:

আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, রাজীবকে ধরতে গিয়ে সিবিআইয়ের এ কূল-ও কূল— দুটোই গেল! গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।

সারদা-কাণ্ডে রাজীব কুমারকে আট বার তলব করেছিল সিবিআই। ‘রক্ষাকবচ’ থাকাকালীন মাত্র দু’বার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টে সেই ‘রক্ষাকবচ’ উঠে যেতেই সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সন্ধান তো মেলেইনি, উল্টে রাজীব নিরুদ্দেশে থেকেই ‘গ্রেফতারি এড়ালেন’। আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, রাজীবকে ধরতে গিয়ে সিবিআয়ের এ কূল-ও কূল— দুটোই গেল!

Advertisement

সিবিআই যদিও হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেও, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রায়ের কপি খতিয়ে দেখার পর, যত দ্রুত সম্ভব সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

রাজীবের খোঁজে কলকাতা এবং বিভিন্ন জেলায় গত দু’সপ্তাহ ধরে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ দল। তার মধ্যেই রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমার ‘নিরুদ্দেশ’ থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পরেই সিবিআই আধিকারিকরা হাইকোর্ট থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ফিরে যান। সেখানে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, সে বিষয়ে আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর এবং কালীচরণ মিশ্রের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন। হাইকোর্টের রায়ের কপি-সহ তাঁরা এ বিষয়ে সবিস্তার রিপোর্ট দিল্লির সদর দফতরে পাঠাবেন। সেখান থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরেই ঠিক হবে, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার বিষয়টি।

Advertisement

তবে সারদা তদন্তে কলকাতায় নিযুক্ত অফিসাররা চাইছেন, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যেতে। কলকাতা হাইকোর্টে গ্রেফতার না করার ‘রক্ষাকবচ’ খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেই সারদা-কাণ্ডে রাজীব কুমারকে জেরা করতে চেয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাজীব কুমার হাজিরা না দিয়ে আইনি লড়াইয়ের পথ বেছে নেন। অন্য দিকে সিবিআই আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজীবকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য তল্লাশি চালিয়ে গিয়েছেন।

কিন্তু রাজীবের নাগাল পাননি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী তাঁকে ‘পলাতক’ এবং ‘আইনভঙ্গকারী’ বলেও বিচারকের সামনে সওয়াল করেন। নিম্ন আদালতে রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন নাকচও হয়ে যায়। আলিপুর আদালতের বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত রায় দিতে গিয়ে জানান, অবিলম্বে রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে গ্রেফতার প্রয়োজন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের শহিদুল্লা মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ ওই রায়ের সঙ্গে একমত নয়। সোমবার রায় দিতে গিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজীবকে হেফাতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। জিজ্ঞাসাবাদের দরকার হলে ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে জানাতে হবে। যদিও নিম্ন আদালতের মতোই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকেও সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন রয়েছে।

প্রথম থেকেই রাজীব মামলা নিয়ে কৌতূহল ছিল। ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানির আগে কড়া মন্তব্য শুনিয়ে বলেছিল, রাজীব কুমারকে আত্মসমপর্ণ করতে। এর পর চার দিন শুনানি হয়েছে। কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। শেষ পর্যন্ত সোমবার রায় রাজীব কুমারের পক্ষেই গেল মনে করছে আইনজীবী মহল। এই রায়ের পর রাজীবকে ফের নোটিস না পাঠিয়ে আইনি পথেই এগোতে চাইছে সিবিআই। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে দিল্লির সদর দফতর থেকে আসা নির্দেশের উপরে।

আরও পড়ুন: টালা ব্রিজে কি আবার বাস চলবে? সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে নবান্ন

আরও পড়ুন: বড় হলে হুইলচেয়ারে বসে কি ঠাকুর দেখতে পারব?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন