জেল-বন্দি রাকেশ নারাজ, প্রার্থী বদল করল কংগ্রেস

নিজেই বেঁকে বসেছিলেন জেলে বন্দি কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা রাকেশ সিংহ। তাই শেষ মুহূর্তে বন্দর এলাকায় প্রার্থী বদল করতে বাধ্য হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাকেশকেই প্রার্থী করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু জেল থেকে মনোনয়ন জমা দিতে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল রাকেশের। দলের তরফে তাঁকে বোঝানো হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৫১
Share:

নিজেই বেঁকে বসেছিলেন জেলে বন্দি কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা রাকেশ সিংহ। তাই শেষ মুহূর্তে বন্দর এলাকায় প্রার্থী বদল করতে বাধ্য হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাকেশকেই প্রার্থী করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু জেল থেকে মনোনয়ন জমা দিতে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল রাকেশের। দলের তরফে তাঁকে বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু নারাজ ছিলেন রাকেশ। সেই কারণেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার রাকেশ-অনুগামী দীপক দাস নামে অন্য এক শ্রমিক নেতাকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচার ভবনে এক মামলার সাক্ষী অরবিন্দ সিংহ ও কতর্ব্যরত পুলিশকে হেনস্থার অভিযোগে রাকেশ-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই অরবিন্দ ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী। রাকেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অনুগামী বলেই পরিচিত। জেল হেফাজতে যাওয়ার পর একাধিক বার অধীরবাবু আলিপুর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাকেশের সঙ্গে দেখা করেছেন। কংগ্রেসের সূত্রে খবর, জেল থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য অধীরবাবু রাকেশকে চাপ দিয়েছিলেন। এমনকী, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তিনি রাকেশের হয়ে প্রচার করবেন বলেও তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

তবে আলিপুর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সুধীরকুমার পাণ্ডে। সম্প্রতি কলকাতার নিউ মার্কেট ঘেরাও অভিযানের দিন ডিসি (সদর) দেবপ্রকাশ সিংহের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সুধীর। ঘেরাও অভিযানের দিন ডিসিকে ইট ছোড়া হয়েছিল। ইটের আঘাতে ডিসির মাথা ফেটে যায়। ওই দিন পুলিশের উপর হামলায় সুধীরকে গ্রেফতার করা হয়। সুধীরও আলিপুর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছেন। রাকেশের পরিবার জানিয়েছে, এ রাজ্য বিহার ও উত্তরপ্রদেশের ভোট সংস্কৃতি আমদানি করতে নারাজ রাকেশ। তাই তিনি জেল থেকে মনোনয়ন দিতে রাজি হননি। রাকেশের ছেলে সাহেব সিংহ বলেন, “বাবার সঙ্গে সংশোধনাগারে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখনই বাবা ভোটে লড়াবেন না বলে জানিয়ে দেন।” এই বিষয়ে অধীরের বক্তব্য, “আমার দলীয় কর্মী জেল হেফাজতে রয়েছেন। সেই কারণে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রে চাপ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই উঠে না। রাকেশকে স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সুপারিশে প্রার্থী করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে আমার কোনও ভূমিকা নেই।”

Advertisement

এ দিন শেষ মুহূর্তে বিজেপি-ও কলকাতায় প্রার্থী তালিকায় বদল ঘটিয়েছে। কর্মী বিক্ষোভের জেরে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিশাল জায়সবালের বদলে প্রার্থী করা হয়েছে মদনলাল গুপ্তকে। তবে ২ নম্বর ওয়ার্ডে লতিকা মণ্ডলের বদলে শমিতা চট্টোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়ার কারণ অন্য। লতিকা পুরসভার কর্মী। কিন্তু তিনি তা দলের গোপন রেখেছিলেন বলে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কথায়, “পুরসভায় চাকরি করে পুরভোটে প্রার্থী হওয়া যায় না। তাই জটিলতা এড়াতে ২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলানো হয়েছে।” তবে ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে তিন বার প্রার্থী বদল করেও শেষ পর্যন্ত সেখানে লড়াই থেকে সরেই আসতে হয়েছে বিজেপিকে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে প্রার্থী দিতে পারেনি তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন