বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জেরে ফের দুর্ঘটনা সকালের শহরে। সোমবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ হেস্টিংস মোড়ে এই ঘটনায় মৃত্যু হল স্কুটার আরোহী এক বৃদ্ধের। তাঁর মাথায় হেলমেটও ছিল।
পুলিশ জানায়, মৃত শুভ্রাংশু সরকারের (৭১) বাড়ি যোধপুর পার্কের একটি আবাসনে। ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা বাসটিতে ভাঙচুর করে। তবে বাসে আগুন লাগানোর চেষ্টা ব্যর্থ করে তাদের লাঠি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুভ্রাংশুবাবু হেস্টিংস এলাকারই একটি জাহাজের যন্ত্রাংশ নির্মাণ সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তাঁর এক ছেলে লন্ডনে এবং এক মেয়ে দিল্লিতে থাকেন। মাঝেমধ্যে গাড়ি নিয়ে বেরোলেও এ দিন সকালে স্কুটার চালিয়েই অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ হেস্টিংস মোড়ের সিগন্যাল খোলা থাকায় টার্ফ ভিউ দিয়ে স্কুটার চালিয়ে সোজা যাচ্ছিলেন শুভ্রাংশুবাবু। আচমকা খিদিরপুর সেতু থেকে নেমে আসা একটি সরকারি বাস সিগন্যাল ভেঙে তাঁর সামনে এসে পড়ে। শেষমুহূর্তে ব্রেক কষেও শুভ্রাংশবাবু স্কুটারটি দাঁড় করাতে পারেননি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফলে, স্কুটার-সহ বাসের নীচে ঢুকে যান তিনি। হেলমেট থাকা সত্ত্বেও গুরুতর ভাবে জখম হন বৃদ্ধ।
বাসের তলায় স্কুটার ঢুকে যাওয়ায় বাসটিও এগোতে পারেনি। বিপদ বুঝে চম্পট দেন বাসের চালক। গুরুতর জখম শুভ্রাংশুবাবুকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় হেস্টিংস থানার পুলিশ। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় লোকেরা। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাস ভাঙচুর শুরু হয়। বাসে আগুন লাগানোরও চেষ্টা হয়। তবে তার আগেই জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তবে ঘটনার জেরে প্রায় ঘণ্টাখানেক এলাকায় যানচলাচল ব্যাহত হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা সঞ্জয় ঘড়াই বলেন, ‘‘এই মোড়ে আগেও দিনে-রাতে আকছার এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তা সত্ত্বেও সব সময়ে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকে না।’’ এই অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ।
এর আগে রবিবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ শ্যামপুকুর থানার রবীন্দ্র সরণিতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। পুলিশ জানায়, রাস্তা পেরোতে গিয়ে বাগবাজারগামী একটি গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ দাস (৬০)। হাসপাতালে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরেই গাড়ি নিয়ে চম্পট দেন চালক। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ থেকে গাড়িটির নম্বর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এই ঘটনার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই রাত ২টো ৫০ মিনিট নাগাদ টালা ব্রিজে দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। চালকেরা এতে আহত না হলেও একটি গাড়ির পিছনে থাকা একটি স্কুটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মেরে রাস্তায় পড়ে যায়। জখম হন স্কুটির তিন আরোহী। আরজিকরে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ‘পুলিশ’ লেখা একটি গাড়িকে আটক করে চিৎপুর থানার পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, গা়ড়িটি রাজ্য পুলিশের একটি ভাড়ার গা়ড়ি। তার মালিকের খোঁজ চলছে।