কাজ আটকে কাজিয়ায়, রাস্তা জুড়ে মরণফাঁদ

পিচের রাস্তা ভেঙে বিশাল বিশাল গর্ত। বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে রয়েছে ইট। গর্তে জমে রয়েছে জলও। তার মধ্যেই মোটরবাইক নিয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলেন তরুণ-তরুণী।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৫ ০০:৪৬
Share:

খন্দপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ ভাবেই দুর্ঘটনায় পড়লেন দুই তরুণ-তরুণী। ছবি: শৌভিক দে।

পিচের রাস্তা ভেঙে বিশাল বিশাল গর্ত। বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে রয়েছে ইট। গর্তে জমে রয়েছে জলও। তার মধ্যেই মোটরবাইক নিয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলেন তরুণ-তরুণী।

Advertisement

সোমবার দুপুর সওয়া দুটো। ঘটনাস্থল জ্যাংড়ার জাগৃতি সঙ্ঘ ক্লাবের সামনে। দু’জনের নাম জানতে চাইতেই ক্রুদ্ধ গলায় জবাব এল, ‘‘নাম জেনে আর করবেনটা কী, পারলে রাস্তার ছবিটা ছাপুন!’’

বাগুইআটির দিক থেকে হাতিয়াড়া পৌঁছতে ওই রাস্তাই একমাত্র পথ। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় রাস্তা সর্বদাই ব্যস্ত। ৩০সি, ৩০সি/১ রুটের বাস ছাড়াও অটো চলে ওই পথে। হাতিয়াড়া থেকে সরাসরি ধর্মতলার বাস ধরতেও ভরসা ওই রাস্তা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙাচোরা অংশের দৈর্ঘ্য অর্ধেক কিলোমিটারও নয়। রাস্তার এই অবস্থার কারণে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও সেখানে লেগেই রয়েছে।

তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবেই পড়ে আছে বাগুইআটি-হাতিয়াড়া রোডের ওই অংশটি। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ভেঙে মরণফাঁদ হয়ে ওঠাই নয়, এর জেরে দিনের ব্যস্ত সময়ে যানবাহনের গতি শ্লথ হয়ে গিয়ে ব্যাপক যানজটও হচ্ছে বলে অভিযোগ।

কেন এই হাল? বিধাননগর পুর-নিগমের স্থানীয় দুই কাউন্সিলর অনিতা বিশ্বাস ও সুজিত মণ্ডলের দাবি, রাস্তাটি পূর্ত দফতরের। তার নীচ দিয়ে কেএমডব্লিউএসের জলের পাইপলাইন গিয়েছে। ওই পাইপলাইন ফুটো হয়েই রাস্তায় জল উঠে আসছে। এ ছাড়া, জাগৃতি সঙ্ঘের কাছে ওই রাস্তাটি আশপাশের অন্যান্য জায়গার থেকে তুলনামূলক ভাবে নিচু। ফলে বিভিন্ন সময়ে জল জমে রাস্তা ভেঙে যায়। সুজিতবাবুর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে জঞ্জাল ফেলে গর্ত ভরাট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু রাস্তায় গাড়ির চাপ এত বেশি এবং পাইপলাইনের ছিদ্র থাকায় সব জঞ্জাল জলে ধুয়ে যাচ্ছে।’’

তবে দুই কাউন্সিরেরই অভিযোগ, বোর্ড গঠন না হওয়ায় এই ধরনের সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। অনিতাদেবী বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের রাস্তা কাউন্সিলরের তহবিল থেকে সারানো সম্ভব নয়। পুর-নিগমকে বিষয়টি পূর্ত দফতরকে জানাতে হবে।’’ গত ১৬ অক্টোবর পুর-নিগমের কাউন্সিলরেরা শপথ নিয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা না হওয়ায় পুর-বিষয়ক সমস্যা সংক্রান্ত প্রকল্পের ফাইল নিগমের বিভিন্ন দফতরে আটকে রয়েছে বলে খবর।

কিন্তু এমন ব্যস্ত একটি রাস্তা এই অবস্থায় পড়ে থাকবে কেন?

পূর্ত দফতরের ইস্টার্ন হাইওয়ে সার্কলের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস পালের দাবি, তাঁদের কাছে অভিযোগ আসেনি। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘আমাদের কেউ কিছু জানাননি। আপনাদের থেকে শুনলাম। নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন