পুজোর শহরে চলছে মিছিল, দুর্ভোগও

হ্যাটট্রিক! তবে মাঠে ময়দানের কোনও খেলায় নয়। রাস্তায় যানজটের ভোগান্তিতে। গত দু’দিনের মতো বৃহস্পতিবারও মিছিল, পুজোর বাজারের কেনাকাটার ভিড়ের ঠেলায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের শিকার হলেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০১
Share:

হ্যাটট্রিক!

Advertisement

তবে মাঠে ময়দানের কোনও খেলায় নয়। রাস্তায় যানজটের ভোগান্তিতে। গত দু’দিনের মতো বৃহস্পতিবারও মিছিল, পুজোর বাজারের কেনাকাটার ভিড়ের ঠেলায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের শিকার হলেন সাধারণ মানুষ। ফলে চলতি সপ্তাহের প্রথম চার দিনেই যানজটের হ্যাটট্রিক করল শহর।

গত মঙ্গল ও বুধবার মিছিল-সমাবেশের জেরে ভুগতে হয়েছিল মানুষকে। যার থেকে নিস্তার মিলল না বৃহস্পতিবারও। পুজোর মুখে একের পর এক রাজনৈতিক দলের রাস্তা আটকে মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচিতে লালবাজারের অনুমতি দেওয়ায় শহরের রাস্তাকে যানজট মুক্ত রাখা নিয়ে কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা কতটা আন্তরিক, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, অনুমতি না দিলেই কোনও সংগঠন বেআইনি ভাবে সমাবেশ করবে না পুজোর মুখে। আর রাস্তা আটকে বেআইনি মিছিল বা সমাবেশ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সুবিধে হবে।

Advertisement

লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, মহালয়ার পরেও শহরের রাস্তা আটকে বেশ কয়েকটি সংগঠন মিছিল এবং সমাবেশ করার আগাম অনুমতি নিয়ে রেখেছে। তবে তার মধ্যেই শহরের রাস্তায় যানবাহনের গতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, পুজোর বাজারের কেনাকাটার ভিড়ের জন্য হাতিবাগান, বড়বাজার এবং গড়িয়াহাটে এমনিতেই গাড়ির গতি কমে গিয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলের ছুটির জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আলিপুর, বালিগঞ্জ, পার্ক সার্কাস, বেকবাগান-সহ বিভিন্ন এলাকায় বারবার থমকেছে গাড়ির চাকা। ফলে সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, এ জে সি বসু রোড, আলিপুর এবং পার্ক সার্কাসে সকাল থেকেই যানজট। যা স্বাভাবিক হতে বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বামফ্রন্টের কৃষক সভার মিছিল ও সমাবেশের জেরেই বেশি ভোগান্তি হয়। বেলা বারোটার পরে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে দফায় দফায় মিছিল আসতে থাকে ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে। যার ফলে এসএন ব্যানার্জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এজেসি বসু রোড, মহাত্মা গাঁধী রোডে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছনোর সময় বন্ধ হয়ে যায় জওহরলাল নেহরু রোড দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণমুখী গাড়ি। এ ছাড়াও ওয়াই রোডে অন্য একটি সংগঠনের জমায়েত এবং মিছিলের জন্য কিছু সময় ব্যাহত হয় যান চলাচল। ওই দুই সমাবেশের জন্য রানি রাসমনি রোডের দু’টি পথ সকাল থেকেই বন্ধ ছিল। ফলে এস এন ব্যানার্জি রোড দিয়ে আসা গাড়িকে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট বা নিউ রোড দিয়ে ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোডে চাপ পড়ে। এক পুলিশকর্তা জানান, বড়বাজার ও পোস্তায় পুজোর কেনাকাটার জন্য সকাল থেকেই ভিড়। যার ফলে মহাত্মা গাঁধী রোডে হাওড়াগামী গাড়ির শেষ প্রান্ত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ছাড়িয়ে। যার রেশ পড়ে ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোডে। মিছিল সমাবেশ শেষ হয়ে গেলেও এ দিন বিকেলের পরেও দেখা যায় ওই সব রাস্তায় গাড়ির সারি। এ ছাড়া শহরে ছোট ছোট আরও দু’তিনটি মিছিল থাকলেও তার জেরে খুব একটা যানজটের সমস্যা হয়নি।

পুলিশ জানায়, পুজোয় দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে বা কাজ চলছে। ফলে অনেক জায়গাতেই রাস্তা সরু হয়ে গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতি দিন মিছিলের জেরে যন্ত্রণা আরও বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন