রোগী-মৃত্যুতে হাসপাতালে তাণ্ডব, গ্রেফতার দুই

রোগীর পরিচিতেরা এলাকায় খবর দিয়ে ৩০-৪০ জন লোক এনে হাসপাতালের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে তাণ্ডব শুরু করে দেন। অভিযোগ, নির্বিচারে ওয়ার্ডে ভাঙচুর করে আসবাব উল্টে দেওয়া হয়। ভাঙা হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩৪
Share:

ভগ্নদশা: হাসপাতালে ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

রোগী-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতালে। বুধবার দুপুরে মৃতের বাড়ির লোকেরা ওই হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ভাঙচুর চালান। অভিযোগ, মারধর করা হয় চিকিৎসক এবং নার্সদের। কয়েক জন নার্সকে দীর্ঘ ক্ষণ আটকেও রাখা হয়। প্রচুর ওষুধ নষ্ট হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। দু’জনকে গ্রেফতার করেছে টিটাগড় থানার পুলিশ।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, টিটাগড়ের জিসি রোডের বাসিন্দা গহর আলি (৫৪) নামে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুকে ঘিরে এই গোলমাল বাধে। মঙ্গলবার রাতে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বুধবার সকালে আচমকাই ওই প্রৌঢ়ের অবস্থার এতটাই অবনতি হয় যে, তাঁকে অন্য হাসপাতালে রেফার পর্যন্ত করা যায়নি। তার আগেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে এ দিন দুপুরে মারা যান তিনি। তবে রোগীর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়নি গহরের। রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরও তাঁদের জানানো হয়নি।

পুলিশ জানায়, গহরের মৃত্যুর পরেই রোগীর পরিচিতেরা এলাকায় খবর দিয়ে ৩০-৪০ জন লোক এনে হাসপাতালের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে তাণ্ডব শুরু করে দেন। অভিযোগ, নির্বিচারে ওয়ার্ডে ভাঙচুর করে আসবাব উল্টে দেওয়া হয়। ভাঙা হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী। নার্সদের বসার জায়গা তছনছ করা হয়। এমনকি, ময়না-তদন্ত না করিয়েই হামলার ফাঁকে গহরের দেহ নিয়ে চম্পট দেন তাঁর পরিজনেরা।

Advertisement

হাসপাতালের সুপার সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, সে সময়ে ওয়ার্ডে প্রায় ১০০ জন রোগী ছিলেন। ছিলেন তাঁদের পরিজনেরাও। তাঁরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। চিকিৎসক-নার্স, এমনকি নিরাপত্তারক্ষীরাও হামলাকারীদের ঠেকাতে ব্যর্থ হন। গুরুতর অসুস্থেরা কান্নাকাটিও জুড়ে দেন। ওয়ার্ডের পরে হামলাকারীরা চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষে চড়াও হয়। চিকিৎসক-নার্সেরা সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। চিকিৎসক-নার্স মিলে মোট পাঁচ জন জখম হন। ওই ঘরের আসবাব ভাঙচুর করার পরে দুষ্কৃতীরা স্টোররুমে চড়াও হয়ে প্রচুর ওষুধও নষ্ট করে বলে অভিযোগ। ওই ওয়ার্ডের উপরেই নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট। তাণ্ডবের জেরে সেখানেও নার্স এবং শিশুদের মায়েরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এর মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। টিটাগড় থানার পুলিশ এবং র‌্যাফ ঘটনাস্থলে এলেও ততক্ষণে অধিকাংশ দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। হাসপাতালের সুপার টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন