ছেঁড়া ক্যালেন্ডার! ডাকাতির হুমকি

পয়লা বৈশাখ সন্ধ্যায় দেশবন্ধুনগরে জয়দেব কর্মকারের সোনার দোকানের সামনে থেকে এক যাত্রীকে রিকশায় তোলেন মানিক।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০২:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

পেশায় না হয় রিকশাচালকই। তাই বলে ছেঁড়া ক্যালেন্ডার দেবে সোনার দোকানের মালিক! তাই প্রতিশোধ নিতে একেবারে ফিল্মি কায়দায় ফোনে সোনার দোকানদারকে ডাকাতির হুমকি দিলেন অভিযুক্ত রিকশাচালক। এই হুমকি-ফোনের রহস্যভেদের পরে না হেসে পারছেন না বাগুইআটি থানার তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিউ টাউনের মহিষগোটের বাসিন্দা মানিক সামন্ত বাগুইআটিতে রিকশা চালান। পয়লা বৈশাখ সন্ধ্যায় দেশবন্ধুনগরে জয়দেব কর্মকারের সোনার দোকানের সামনে থেকে এক যাত্রীকে রিকশায় তোলেন মানিক। সে দিন হালখাতা উপলক্ষে দোকানের গ্রাহকদের মিষ্টি ও ক্যালেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। মানিকও একটা ক্যালেন্ডার চেয়ে আবদার করেন। আবদার শুনে প্রথমে ‘না’ বলেও পরে মানিকের হাতে ক্যালেন্ডার তুলে দেন জয়দেব। তাতে খুবই খুশি হয়েছিলেন ওই রিকশচালক। বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-মেয়েকে তিনি বর্ণনা দেন, কী ভাবে ক্যালেন্ডারটি পেলেন। কিন্তু টাঙাতে গিয়ে দেখেন ক্যালেন্ডারটি ছেঁড়া। পুলিশ জানায়, তা দেখে রীতিমতো অভিমানী হয়ে পড়েন মানিক। তাঁর ধারণা হয়, রিকশাচালক বলেই হয়তো জেনেবুঝে তাঁকে ছেঁড়া ক্যালেন্ডার দিয়েছেন দোকানমালিক।

ক্যালেন্ডারে ওই দোকানের ফোন নম্বর ছিল। মাঝখানে কিছু দিন চুপ থাকলেও রাগ কমেনি তাঁর। গত সোমবার সন্ধ্যায় সেই নম্বরে ফোন করে মানিক হুমকি দেন, ‘মঙ্গলবার রাত ২টোয় দোকানে ডাকাতি করব। পারলে আটকে নে’। প্রথম হুমকিকে তেমন আমল দেননি জয়দেববাবু। রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ একই নম্বর থেকে আবার ফোন আসায় থানায় অভিযোগ করার ভয় দেখান তিনি। তাতে দমানো যায়নি ওই মানিককে। পাল্টা বলেন, ‘পুলিশ কিছু করতে পারবে না। যত ইচ্ছে পাহারা লাগা। রাত ২টোর সময়েই ডাকাতি করব’।

Advertisement

ডাকাতির হুমকিকে এ বার আর ফেলতে পারেননি জয়দেববাবু। পরের দিন মঙ্গলবার সোজা থানায় ছোটেন তিনি। সে দিনই রাতেই ডাকাতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে ফোনে। তাই তদন্তের পাশাপাশি, সোনার দোকানের সামনে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। মোবাইলটি তাঁর হলেও সিম এক আত্মীয়ের নামে নিয়েছিলেন মানিক। সেই সূত্র ধরে মানিককে পাকড়াও করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় অভিযুক্ত দোষ কবুল করেন। বিধাননগর সিটি পুলিশ জানিয়েছে, মানিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জয়দেব বলেন, ‘‘এমনও যে হতে পারে, বিশ্বাস হচ্ছে না।’’ আর অভিমানী গলায় এখনও মানিক বলে চলেছেন, ‘‘ছেঁড়া ক্যালেন্ডার দেবে কেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন