কী ভাবে মারধর করা হয়েছে দেখাচ্ছেন অভিযোগকারীরা।— নিজস্ব চিত্র।
মামারবাড়ি বেড়াতে এসে পাড়ার ‘দাদা’দের হাতে সর্বস্ব খোয়ালেন ভাগ্নে এবং তাঁর পাঁচ বন্ধু। সোমবার রাতে নিউটাউন থানা এলাকার তারুলিয়ার ঘটনা।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা শিবপদ সর্দার। সোমবার তিনি কলকাতাতে আসেন।তাঁদের পুরীতে রথযাত্রা দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগে তিনি পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে নিউটাউনে তাঁর মামা শ্যামল ঢালির বাড়িতে আসেন। এসে দেখেন মামা নেই। ফোন করেন মামাকে। শ্যামল অপেক্ষা করতে বলেন।
শিবপদ ও তাঁর পাঁচ বন্ধু মামারবাড়ির পাশেই একটি মাঠে অপেক্ষা করতে থাকেন। সেই সময় বিপত্তি। শিবপদের অভিযোগ,“জনা দশেক যুবক তাঁদের কাছে এসে পরিচয় জানতে চায়। তিনি নিজের এবং মামার পরিচয় দেন। মামার জন্য যে তাঁরা অপেক্ষা করছেন তা-ও জানান। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।”
দেখুন ভিডিয়ো...
অভিযোগ, ওই যুবকরা শিবপদ এবং তাঁর বন্ধুদের ওপর চড়াও হয়। তাঁদের ভয় দেখায় তাঁরা চোর-চোর বলে চেঁচাবে। তাতে পাড়ার লোকজন শিবপদদের বাংলাদেশ থেকে আসা চোর বলে পাকড়াও করবে। শিবপদ বলেন, “প্রথমে আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তারপর আমাদের বেধড়ক মারতে শুরু করে।তারপরে ভয়ে ওই যুবকদের দাবি মতো, সঙ্গে থাকা সব টাকা দিয়ে দিই। ছ’জনের কাছে সব মিলিয়ে প্রায় এক লাখ টাকা ছিল। সঙ্গের মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয় ওই যুবকরা।” শিবপদর বন্ধু অমর গায়েনও অভিযোগ করেন যে তাঁদের ওই যুবকরা ব্যপক মারধর করে টাকা-মোবাইল কেড়ে নেয়।
আরও পড়ুন, বাইক আটকে আক্রান্ত পুলিশ, তাণ্ডব থানাতেও
শিবপদ নিউটাউন থানার আধিকারিকদের জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। ঘটনার কিছুক্ষণ পরই মামা শ্যামল ঢালি ফেরেন। তাঁকে সমস্ত ঘটনা জানানোর পর, ভাগ্নেকে নিয়ে নিউটাউন থানাতে অভিযোগ জানাতে যান তাঁরা। তার আগে শিবপদ এবং তাঁর বন্ধুরা বাংলাদেশ দূতাবাসে গোটা ঘটনা জানান। সেখান থেকেও ফোন করা হয় নিউটাউন থানাতে।
আরও পড়ুন, পর্ণশ্রীতে ছুরি দেখিয়ে, মুখে বালিশ দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা
অভিযোগ পেয়ে রাতেই ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় পাঁচজনকে। তাদের জেরা করে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এখনও লুঠের টাকা উদ্ধার হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতদের পুরনো অপরাধের নজির না থাকলেও, এলাকায় ‘দাদা’ হিসেবে পরিচিত সবাই। প্রত্যেকেই স্থানীয় সূর্যোদয় ক্লাবের সদস্য। শিবপদদের এলাকায় নতুন দেখে তাঁদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে তাঁরা। একই রকম অভিযোগ এর আগেও উঠেছে এই ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে।