সিএফ ব্লকের সেই পার্ক, এখন যে অবস্থায়।
‘কোথায় এলাম রে?’ ‘এগুলো কী রে?’ কাশফুল ঠেলে রেলগাড়ি দর্শনের আগে দুর্গার কাছে অপার কৌতূহলী অপু। কিছুই জানে না এমন ভাবে শুধু ঠোঁট ওল্টাচ্ছে দিদি। শৈশবের এমনই পাঁচালির দেখা মিলতে পারে সল্টলেকের সিএফ ব্লকে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালি’ উপন্যাসে বর্ণিত গ্রামবাংলার আদলে সিএফ ব্লকের শিশু উদ্যানকে সাজানোর পরিকল্পনা করেছেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং তাঁর স্ত্রী প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী দত্ত।
ওই থিম পার্ক তৈরির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। তাতে চোখ বোলালেই স্পষ্ট হবে, গ্রামবাংলার দৃশ্যপট ফুটিয়ে তুলতে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। দরপত্র অনুযায়ী, রেলিং এবং গ্রিল তৈরি হবে বাঁশের আদলে। উদ্যানের যে দেওয়াল এখন আছে তাতে পড়বে গ্রাম বাংলার প্রলেপ। উদ্যানের ভিতরে তৈরি হচ্ছে ছোট্ট জলাশয়। ঝাঁ চকচকে দোতলা-তিনতলার ভিড়ে গ্রাম তো, তাই জলাশয়ে কচুরপানা এবং গতিশীল ডিঙির চাহিদা রয়েছে। পাঁচটি খড়ের চালার ঘরের সামনে থাকবে গরু, ছাগলের প্রতিকৃতি। গ্রামে ঠিক যেমন দেখা যায়।
তবে বড় চমক ইঞ্জিন-সহ তিন কামরার কু-ঝিক-ঝিক। দরপত্রে বলা হয়েছে, প্রযুক্তির সাহায্যে ইঞ্জিন থেকে যে ধোঁয়া বেরোচ্ছে তা আবহে ফুটিয়ে তুলতে হবে। কাশফুল ঠেলে যা দেখতে ছুটছে অপু-দুর্গার প্রতিকৃতি। ঘটনাচক্রে বুধবারই কারশেড থেকে মেট্রোর পরীক্ষামূলক দৌড় দেখার জন্য যাত্রাপথের অলিন্দে মোবাইল হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকশো অপু-দুর্গা। সিএফ ব্লকের উদ্যানে সেই দৃশ্যপটের মডেল তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।
ইন্দ্রাণীর কথায়, “চারপাশে পরিপাটি সাজানো একটা শহর। শিশু উদ্যানে ছোট বাচ্চারা খেলে। সেখানে কোনও কৃত্রিমতা চাইছি না। শেষ পর্যন্ত ভাবনার প্রতিফলন কতখানি ঘটবে জানি না। তবে চেষ্টা করা হবে।” মেয়র-পত্নী জানান, আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা খরচে কাজটা হচ্ছে।