ভোল বদল হচ্ছে দুই স্টেশনের

হাওড়ার চাপ কমাতে গুরুত্ব বাড়ছে সাঁতরাগাছি ও শালিমারের

স্টেশনে যাতায়াতের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি এখনও। তা সত্ত্বেও প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে বদলে ফেলা হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের প্রান্তিক দুই স্টেশন শালিমার ও সাঁতরাগাছিকে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

স্টেশনে যাতায়াতের জন্য পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি এখনও। তা সত্ত্বেও প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে বদলে ফেলা হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের প্রান্তিক দুই স্টেশন শালিমার ও সাঁতরাগাছিকে।

Advertisement

দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, হাওড়া স্টেশনের ভার কমাতে শালিমার ও সাঁতরাগাছি থেকে কিছু দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা দীর্ঘ দিনের। আর তা বাস্তবায়িত করতে ২০১৫ সাল থেকে দু’টি স্টেশনেই কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, আগামী দিনে দক্ষিণ ও মধ্য ভারতমুখী সমস্ত নতুন ট্রেন এই দুই স্টেশন থেকে ছাড়বে। তাই শালিমার ও সাঁতরাগাছিকে টার্মিনাল স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বিমানবন্দরের ধাঁচেই তৈরি হচ্ছে ওই প্রকল্প। দু’টি স্টেশনেই গড়া হবে সাততলা নতুন ভবন। তার বিভিন্ন তলে থাকবে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের নানা রকম ব্যবস্থা। প্ল্যাটফর্ম থাকবে একতলায়। অন্যান্য তলে থাকবে পার্সেল রুম, ক্লোক রুম, ভিআইপি লাউঞ্জ, এটিএম, টিকিট সংরক্ষণের অফিস, রেস্তোরাঁ ও বিশ্রাম কক্ষ।

Advertisement

সাঁতরাগাছি স্টেশনের কিছুটা দূরে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। স্টেশন থেকে সরাসরি ওই রাস্তায় আসার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের পাশ থেকে তৈরি হচ্ছে এমন একটা উড়ালপুল, যা অর্ধবৃত্তাকারে পাক খেয়ে স্টেশন বিল্ডিং-এর তিনতলা ঘেঁষে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে নামবে। যাত্রীরা যাতে স্টেশন বিল্ডিং থেকে প্রয়োজন মতো যে কোনও প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য তৈরি হবে একটি ফুট ওভারব্রিজ। এ ছাড়া, মালপত্র নিয়ে নামা-ওঠার জন্য থাকবে এসক্যালেটর। যাত্রীরা যাতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়েই গাড়ি পান, তার জন্য থাকবে অটো ও ট্যাক্সির স্ট্যান্ড। তৈরি হচ্ছে সাবওয়ে। ঠিক একই ব্যবস্থা হচ্ছে শালিমার স্টেশনেও। সেখানেও স্টেশনে পৌঁছনোর জন্য তৈরি হচ্ছে উড়ালপুল, যা যুক্ত করবে ফোরশোর রোড ও বিদ্যাসাগর সেতুর আন্দুল রোডমুখী অ্যাপ্রোচ রোডকে।

আরও পড়ুন:কলকাতার নিউ টাউনে এ বার সোনার কেল্লা

দু’টি স্টেশনেই বাড়ানো হচ্ছে প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা। সাঁতরাগাছিতে দু’টি ও শালিমারে তিনটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। রেলের কতার্দের আশা, ২০১৯-এর মধ্যেই দু’টি স্টেশনের কাজ শেষ হয়ে যাবে।

কিন্তু এই প্রকল্প নিয়ে রেলের অন্দরেই উঠেছে বেশ কিছু প্রশ্ন।
এখন সাঁতরাগাছি দিয়ে মেল, এক্সপ্রেস এবং ইএমইউ লোকাল চলে প্রায় ২৫০টি। নতুন স্টেশন হলে দূরপাল্লার ট্রেন বাড়বে। বাড়বে যাত্রীর সংখ্যাও। একই অবস্থা হবে শালিমারেও। পরিবহণ ব্যবস্থা
উন্নত না হলে এত সংখ্যক যাত্রী স্টেশনে আসা-যাওয়া করবেন কী ভাবে? স্টেশনের সামনে একমাত্র সড়কপথ কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। ট্রেন এলে এখনই ওই রাস্তা যাত্রীদের
ভিড়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। টার্মিনাল স্টেশন চালু হলে অত যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ কি ওই রাস্তা নিতে পারবে? যে সব যাত্রী ট্রেন থেকে
নেমে কিছুটা দূরে রাজ্য সরকারের তৈরি করা বাস টার্মিনাসে যেতে চাইবেন, তাঁরাই বা যাবেন কী করে?

কী ভাবছেন রেল কর্তৃপক্ষ?

রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নয়া টার্মিনাল স্টেশন তৈরির যে প্রকল্প হচ্ছে, তাতে রাজ্য সব রকম সাহায্য করছে। বাকি যে সব প্রশ্ন উঠেছে, তা সমাধান করতে রেল ও রাজ্য দু’পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হবে। তাতেই সমস্যা মিটে যাবে বলে মনে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন