প্রতীকী ছবি
এক ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল স্কুলের এক অশিক্ষক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরেই শুক্রবার সকালে কেষ্টপুরের ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। অভিযুক্ত অশিক্ষক কর্মচারীকে মারধর করা হয় বলেও পাল্টা অভিযোগ। এর পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে বাগুইআটি থানার পুলিশ ওই অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। পুলিশকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। পরে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত তিন দিন ধরে টিফিনের সময়ে আঁকা শেখানোর নামে তিন ছাত্রীকে নির্যাতন করেন ওই অশিক্ষক কর্মচারী। তাদের এক জন ঘটনাটি নিজের মাকে জানায়। ওই ছাত্রীর মা এ দিন জানান, কয়েক দিন ধরেই তাঁর মেয়ে শারীরিক অস্বস্তির কথা জানাচ্ছিল। ওকে চাপ দিতেই ঘটনাটি জানা যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই কর্মীর শাস্তি হওয়া দরকার। যাতে আর কোনও মেয়ের ক্ষতি করতে না পারেন।’’
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, টিফিনের সময়ে খাওয়াদাওয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই স্কুলে। ছাত্র-ছাত্রীরা খাচ্ছে কি না, তাও দেখা হয় না। সেই সময়েই ওই তিন ছাত্রীকে আঁকার নাম করে দোতলার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, তার পরেই এমন ঘটনা ঘটত। এমনকি ঘটনাটি যাতে বাড়িতে না জানানো হয়, তার জন্য ছাত্রীদের ভয়ও দেখানো হত। পুলিশ জানিয়েছে, আরও দুই ছাত্রীকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে।
এরই প্রতিবাদে এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অভিভাবকেরা হাজির হন স্কুলে। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। তা ঘিরে উত্তেজনা বাড়ে। অভিযুক্তকে নিগ্রহের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় অভিভাবকদের। বাগুইআটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। অভিযুক্তকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে বাধা পায় পুলিশ। অভিভাবকেরা দাবি তোলেন, তাঁদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে অভিযুক্তকে। পুলিশ অভিযুক্তকে গাড়িতে তুলতে গেলে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। যদিও এই বিষয়ে পুলিশ মুখ খোলেনি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এমন পরিস্থিতি চলে। পরে অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশ চলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
যদিও স্কুল সূত্রের দাবি, স্কুলে যাঁরা অনুদান দেন পত্র মারফত তাঁদের পড়ুয়াদের আঁকা ছবি পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই কাজই চলছিল। সেখানে অনেক ছাত্রীই ছিল। তবে স্কুলের অধ্যক্ষা সুদীপ্তা মণ্ডল জানিয়েছেন, আইনের পথে তদন্ত চলবে, তাই এ নিয়ে এখনই তাঁরা কথা বলতে চান না। পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।