Bangla news

কালীপুজোর চাঁদা ৪০ হাজার! দিতে না চাওয়ায় ১০ দোকানে তালা পড়ল দমদমে

কালীপুজোর নামে তোলাবাজির অভিযোগ দমদম এলাকায়। কী হল জানেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:০৮
Share:

দোকানের তালা ঝালাই করে সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সেই সব দোকান ঘুরে দেখছে পুলিশ —নিজস্ব চিত্র।

কারও কাছে চাওয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। কারও কাছে বা ৩০ হাজার। ২০ হাজারও চাওয়া হয়েছে কারও কারও কাছে। কালীপুজোয় ওই পরিমাণ টাকা না দিলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

যে ব্যবসায়ীরা দাবি মতো চাঁদা দেননি, এ বার তাঁদের দোকান বন্ধ করে দিল দমদম ক্যান্টনমেন্টের নতুন বাজার এলাকার একটি পুজো কমিটি। দোকানের তালা ঝালাই করে সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই। স্থানীয় ‘রবীন্দ্রনগর নতুন বাজার সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র তরফে ওই এলাকার সমস্ত ব্যবসায়ীর কাছে কালীপুজোর চাঁদা চাওয়া হয়। কিন্তু, টাকার অঙ্ক জানার পর অনেকেই তা দিতে অস্বীকার করেন। এর পরেই আসতে থাকে হুমকি। দাবি মতো চাঁদা না পেলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে ওই পুজো কমিটির কর্তারা হুমকি দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

আরও পড়ুন: টাকা দিয়ে সাহায্য, পুলিশের ‘অন্য মুখে’ আপ্লুত যুবক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন বাজারের ফাস্ট ফুডের এক দোকানি বলেন, ‘‘কালীপুজোর নামে তোলাবাজি করা হচ্ছে। গত বার আড়াই হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার আমার কাছে ৪০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। ওই টাকা না দেওয়ায় আমাদের দোকানের তালা সিল করে দেওয়া হয়েছে। দোকান খুলতে পারছি না। সবাই মিলে আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’

ওই এলাকার এক চাল ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘‘পুজোর সময় চাল দেওয়া নিয়ে গত বছর আমার সঙ্গে কমিটির ঝামেলা হয়েছিল। তাই এ বছর আমার কাছে চাঁদা চাওয়া হয়নি। কিন্তু, আমার দোকানও সিল করে দেওয়া হয়েছে। কেন তা বুঝতে পারছি না। এতো রীতিমতো মগের মুলুক হয়ে উঠেছে।’’

আরও পড়ুন: তরুণীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হল পর্ণশ্রীতে

ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা যায়। চাঁদার জুলুমের প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসীয়া নতুন বাজার এলাকার রাস্তা অবরোধ করেন। ওই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে দমদম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশি হস্তক্ষেপে পরে অবরোধ তুলে নেন অবরোধকারীরা। তবে, এ বিষয়ে ওই পুজো কমিটির তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই পুজো কমিটি এ বছর থিম-পুজো করবে বলে ব্যবসায়ীদের কাছে অতিরিক্ত চাঁদা দাবি করে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনাটি তারা খতিয়ে দেখছে। স্থানীয় কাউন্সিলর জগন্নাথ বিশ্বাস বলেন, “যে বা যারা এই কাজ করে থাকুক না কেন তারা কঠোর শাস্তি পাবেন।”

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ওই পুজো কমিটির তরফে তাঁদের কাছে চাঁদা চাইতে এসেছিলেন রামচন্দ্র দে, বিবেকানন্দ দে, দেবাশিস বিশ্বাস-সহ অনেকেই। দাবি মতো চাঁদা না দিলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে তাঁরাই হুমকি দিয়েছিলেন। এ দিন পুলিশ রামচন্দ্র, বিবেকানন্দ এবং তপু বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা এলাকার এক দাপুটে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বলে এলাকাবাসীর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন