ভারসাম্যহীন নয় অভিযুক্ত, বলছে রিপোর্ট

অন্য একটি মামলায় নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করে এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের মামলা থেকে খালাস পেতে চাওয়া এক যুবকের দাবি নস্যাৎ করে চিকিৎসকেরা জানালেন, ওই যুবক সম্পূর্ণ সুস্থ। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিচার করা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৯
Share:

একই দিনে শহরের দু’টি পৃথক আদালতে দুই কিশোরীর যৌন নিগ্রহের মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হল। প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো) আইনে একটি মামলায় নাবালিকা ভাইঝিকে ধর্ষণের দায়ে কাকার দশ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়। অন্য একটি মামলায় নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করে এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের মামলা থেকে খালাস পেতে চাওয়া এক যুবকের দাবি নস্যাৎ করে চিকিৎসকেরা জানালেন, ওই যুবক সম্পূর্ণ সুস্থ। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিচার করা যায়।

Advertisement

সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায় ও সৈকত পাণ্ডে জানান, বউবাজার থানা এলাকার ললিত ব্যানার্জি স্ট্রিটের এক ধর্মস্থানে গত ৩ নভেম্বর এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, হাসান আলি নামে বছর তিরিশের এক যুবক ওই রাতে ধর্মস্থানে ঢুকেছিল। শিশুটি সেখানে ভিক্ষা করত। সে জানায়, টাকা দেওয়ার নাম করে হাসান তাকে ধর্মস্থানের ছাদে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহ করে। রাতেই গ্রেফতার করা হয় হাসানকে। পকসো আইনে মামলা দায়ের হয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।

সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাসান তার আইনজীবী মারফত কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের কাছে আবেদন করে জানায়, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে মামলা থেকে খালাস করা হোক। এর পরে মুখ্য বিচারক কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারকে নির্দেশ দেন, হাসানের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে। সুপার পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল গড়ে হাসানকে পরীক্ষা করেন। বৃহস্পতিবার সুপার আদালতে রিপোর্ট পেশ করে জানালেন, ওই যুবক মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিচার করা যায়। সৈকতবাবু জানান, মুখ্য বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন ১০ এপ্রিল হাসানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করতে।

Advertisement

অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই শিয়ালদহ আদালতে ষোলো বছরের ভাইঝিকে একাধিক বার ধর্ষণের দায়ে কাকার দশ বছর সশ্রম কারাবাসের নির্দেশ হয়। অজয় সাউ নামে চিৎপুরের ওই বাসিন্দাকে কারাবাসের পাশাপাশি নির্যাতিতাকে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা ক্ষতিপূরণও দিতে বলেছেন শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। বিচারক জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রকেও নির্দেশ দিয়েছেন, ওই কিশোরীকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে।

সরকারি কৌঁসুলি বিবেক শর্মা জানান, চিৎপুরের হরিধন দত্ত লেনের ওই বাসিন্দা ওই কিশোরীকে ঘরে একা পেয়ে গত বছর একাধিক বার ধর্ষণ করে অজয়। গত বছরের ২৯ জুন সে হাতেনাতে ধরা পড়লে থানায় অভিযোগ জানান কিশোরীর মা। তার পরেই পুলিশ অজয়কে গ্রেফতার করে। কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার ও তার মায়ের গোপন জবানবন্দিও নথিভুক্ত করায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, কিশোরী তার গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছিল, প্রতি বার ধর্ষণের পরে কাকা তাকে হুমকি দিয়ে বলত, কাউকে জানালে পরিণাম খারাপ হবে। সেই ভয়ে প্রথম সে কিছু জানাতে পারেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন