—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
‘আইআইএম ক্যালকাটা’য় ( আইআইএম জোকা নামে সমধিক পরিচিত) ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশনের ডিসি (ডেপুটি কমিশনার) ন’জন সদস্যের এই সিট তৈরি করেছেন। সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার পদাধিকারী। অন্য দিকে, এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে রাজ্য মহিলা কমিশন।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার দিন ‘নির্যাতিতা’ কলেজে কখন প্রবেশ করেছিলেন, কখন বেরিয়েছেন, তা-ও ফুটেজে দেখা হচ্ছে বলে খবর। কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন, সেখানে প্রবেশের সময় চেকিং হয় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আইআইএম জোকার বয়েজ় হস্টেলে নিয়ে গিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ‘নির্যাতিতা’র লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবারই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে আগামী শনিবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এর মধ্যে তরুণীর বাবা দাবি করেন, মেয়ের উপর কোনও অত্যাচার হয়নি। কেউ খারাপ ব্যবহার করেননি। সংবাদমাধ্যমের সামনে ‘নির্যাতিতা’র বাবা যা জানিয়েছেন, আদালতে এসেও তিনি সেই কথাগুলি বলেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়। তবে তিনি বা তাঁর তরফে কেউ শনিবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
পুলিশের কাছে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছিলেন, শুক্রবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি অভিযুক্তের কাউন্সেলিং করাতে আইআইএম জোকায় গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত তাঁকে বয়েজ় হস্টেলের ভিতর নিয়ে যান। বয়ান অনুসারে, সেখানে ওই তরুণীকে পিৎজ়া এবং জল খেতে দেওয়া হয়। খাবারে কিছু মেশানো ছিল বলে অভিযোগ। ‘নির্যাতিতা’ জানান, ওই খাবার খাওয়ার পরেই তাঁর মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে। এই সময় তাঁর বমি পেলে তাঁকে শৌচাগারেও যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তের ব্যাখ্যা ছিল, বয়েজ় হস্টেলে এক জন মেয়ে এসেছে, এটা তাঁর বন্ধুরা জেনে যেতে পারেন, এমনটাই জানিয়েছেন তরুণী। তাঁর লিখিত বয়ান অনুযায়ী, দু’জনের কথাবার্তা চলার সময়ে হঠাৎই অভিযুক্ত তাঁর চুল টেনে ধরেন। আত্মরক্ষায় চড় মারেন তরুণী। তার পরেই অভিযুক্ত তাঁর মাথা ঠুকে দেন। সংজ্ঞা হারান ‘নির্যাতিতা’। লিখিত বয়ানে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছেন, অর্ধচেতন অবস্থায় তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অনেক পরে জ্ঞান ফিরলে তরুণী দেখেন যে, তিনি বয়েজ় হস্টেলে রয়েছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ করেন তিনি। তরুণীর অভিযোগ, ম্যানেজমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই অভিযুক্ত হস্টেলে ঢোকার আগে রেজিস্টার খাতায় তাঁকে নাম নথিভুক্ত করতে দেননি।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম আরজি কর এবং কসবার ঘটনার মতোই আইআইএম জোকার ক্ষেত্রেও ধর্ষণে অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)