সাইবার জালিয়াতি চক্র ধরতে শহরে ‘সিট’ গঠন

৩০ জুন বেকবাগানের একতথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় হানা দেন সাইবার থানার অফিসারেরা। প্রথম সারির এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নাম করে মার্কিন নাগরিকদের প্রতারণার অভিযোগে সংস্থার কর্ণধার শরাফত আলিকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৪
Share:

ফাইল চিত্র।

বেকবাগানের শরাফত আলি হিমশৈলের চূড়ামাত্র। খাস কলকাতায় বসে বিদেশি নাগরিকদের ঠকিয়ে চলছে বহু জালিয়াত চক্র—এমনই দাবি লালবাজারের একাংশের। শরাফতের সূত্র ধরে সেই সব দুষ্কৃতীদের ধরতে জাল বিছিয়েছেন তদন্তকারীরা। লালবাজারের খবর, এই তদন্তে গুন্ডাদমন শাখার সহকারী কমিশনার পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তৈরি করা হয়েছে। যাতে রয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তকারীরা। জালিয়াতির পাশাপাশি বিদেশিদের অর্থ কী ভাবে পাচার করা হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখছে সিট।

Advertisement

৩০ জুন বেকবাগানের একতথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় হানা দেন সাইবার থানার অফিসারেরা। প্রথম সারির এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নাম করে মার্কিন নাগরিকদের প্রতারণার অভিযোগে সংস্থার কর্ণধার শরাফত আলিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও দু’জনকে। তাঁরা বিদেশিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ সরানোর কাজ করতেন। রাজ্যের সাইবার মামলার বিশেষ কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘জালিয়াতির টাকা কোথায় কোথায় সরানো হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শরাফতের অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত সিপিইউ, হার্ড ডিস্কগুলিকে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় সেগুলিও জোরালো প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

এই তদন্তেই উঠে এসেছে লুকিয়ে থাকা আরও জালিয়াতের কথা। পুলিশ সূত্রে খবর, মার্কিন মুলুকে কত জন এমন অপরাধের শিকার হয়েছেন, তা জানতে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। মার্কিন মুলুক থেকে যাতে অভিযোগের নথিপত্র মেলে তার জন্য দূতাবাসেও যোগাযোগ করা হবে। সম্প্রতি নিউ টাউনে হানা দিয়েও এমন এক জালিয়াতি চক্রকে ধরেছে সিআইডির সাইবার অপরাধ শাখা। সে ক্ষেত্রেও জার্মান সরকারের কৌঁসুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগকারিণীকে এ দেশে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, তদন্তে মার্কিন মুলুক থেকে সাহায্য করা হলে শরাফতদের বিরুদ্ধে মামলা জোরালো হবে। যে বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নাম করে প্রতারণা করা হতো, প্রয়োজনে তাঁদের কাছেও আইনি সাহায্য চাওয়া হতে পারে। বিভাসবাবুর মতে, এমন ভাবে জালিয়াতি করা হলে সামগ্রিক ভাবে এ রাজ্যের বিপিও সেক্টরের বদনাম হবে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা মার খাবে, কমবে চাকরির সুযোগও।

তদন্তকারীদের একাংশ বলছেন, শহরের আনাচে-কানাচে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এমন ভুঁইফো়ড় বিপিও সংস্থা কোথায় কোথায় গজিয়ে উঠেছে আঁচ করা কঠিন। তাই বাছাই করা অফিসারদের বিভিন্ন এলাকায় নজর রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিউ টাউন হোক বা বেকবাগানের জালিয়াত চক্র, সংবাদপত্র বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়োগ করত। সে সবের উপরেও নজর রাখছেন গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন